কাতারে ফিফা বিশ্বকাপ জয়ের মাধ্যমে ক্যারিয়ারে ক্লাব এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলের ব্যক্তিগত-দলগত সম্ভাব্য সব শিরোপাই জিতে নিয়েছেন লিওনেল মেসি। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে ক্যারিয়ারে পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপে মাঠে নামার আগে আর্জেন্টাইন ক্ষুদে জাদুকর জানিয়ে দিয়েছিলেন, এবারই শেষবারের মতো ফুটবলের বিশ্বমঞ্চে দেখা যাবে তাকে।
আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়ের পর অবশ্য মেসি বলেছিলেন, পরের বিশ্বকাপ না খেললেও এখনই আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নিচ্ছেন না তিনি। কারণ হিসেবে আর্জেন্টিনার অধিনায়ক উল্লেখ করেছিলেন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হিসেবে খেলা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছেকে। তবে ২০২৬ বিশ্বকাপে তাকে দেখা যাবে নাকি, সে বিষয়ে ৩৫ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড কোনো মন্তব্য করেননি।
আর্জেন্টিনার কোচ-খেলোয়াড় থেকে শুরু করে সমর্থকরা আগামী বিশ্বকাপেও মেসিকে দেখার বিষয়ে বারবার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। যদিও বাস্তবিকপক্ষে তা এক রকম অলীক কল্পনাই। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোয় যখন পরের বিশ্বকাপের পর্দা উঠবে, ততদিনে যে মেসির বয়স হয়ে যাবে ৩৯।
চল্লিশের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আরেকটা বিশ্বকাপ খেলা কতটা কঠিন, তা স্বয়ং লিওনেল মেসিও জানেন। তবে সম্ভাবনাটা উড়িয়ে দিচ্ছেন না রেকর্ড সাতবার ব্যালন ডি অর জেতা এ ফুটবলার।
আর্জেন্টিনার ওলে পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, বয়সের কারণে আমার পক্ষে ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা কঠিন। আমি ফুটবল খেলতে ভালোবাসি। যদি খেলাটা আমি উপভোগ করি এবং শারীরিকভাবে ফিট থাকি, তাহলে খেলা চালিয়ে যাব। পরবর্তী বিশ্বকাপ আসতে এখনও অনেক সময় বাকি রয়েছে। আমার ক্যারিয়ার কোন দিকে যাবে, তার ওপর বিষয়টি নির্ভর করছে।
আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনিও আশাবাদী, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং মেক্সিকোয় অনুষ্ঠিতব্য ২০২৬ বিশ্বকাপেও মেসিকে আলবিসেলেস্তেদের ১০ নম্বর জার্সিতে দেখা যাবে। গত মাসের শুরুতে এক সাক্ষাৎকারে লিওনেল স্কলোনি বলেন, আমার মনে হয় মেসি সেখানে খেলবে (২০২৬ বিশ্বকাপ)। এটা তার ওপর নির্ভর করছে। সে নিজেকে ফিট মনে করলে এবং আরও কিছু জিততে চাইলে এমনটা হতে পারে। তার জন্য জাতীয় দলের দরজা সর্বদা উন্মুক্ত থাকবে। সে মাঠে সব সময় আনন্দে থাকে এবং তাকে পাওয়াটাও আমাদের জন্য দারুণ ব্যাপার হবে।
কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে মাঠে নামার মাধ্যমে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন লিওনেল মেসি। পরের বিশ্বকাপে খেলতে পারলে ফুটবল ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপের ৬টি ভিন্ন আসরে মাঠে নামার কীর্তি গড়বেন এ আর্জেন্টাইন।
আগামী বিশ্বকাপে খেলতে পারলে মেসির সামনে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ড ছোঁয়ার এবং ভাঙার হাতছানি থাকবে। কাতার বিশ্বকাপে ৭ গোল করার মাধ্যমে ফুটবলের বিশ্বমঞ্চে মেসির গোলসংখ্যা ১৩টি। ১৬ গোল করে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে রয়েছেন কিংবদন্তি জার্মান স্ট্রাইকার মিরোস্লাভ ক্লোসা।