রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে আক্রমণকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসী জার্মানির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন। বৃহস্পতিবার স্তালিনগ্রাদের লড়াইয়ের ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনের সমাপনী অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এই তুলনা করেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ইউক্রেনে লেপার্ড ট্যাংক পাঠানোর বিষয়ে জার্মানির সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে রুশ প্রেসিডেন্ট দাবি করেছেন, ইতিহাস নিজেই পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে।
পুতিন বলেন, এটি অবিশ্বাস্য, কিন্তু সত্য। আবারও আমরা জার্মান লেপার্ড ট্যাংকের হুমকিতে।
রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষায় ইউক্রেনকে সহযোগিতাকারী দেশগুলোর একটি জার্মানি।
গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া। হামলার পর পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে অস্ত্র ও সহযোগিতা পাঠাতে শুরু করে।
স্তালিনগ্রাদের আধুনিক নাম ভোলগোগ্রাদে দেওয়া ভাষণে পুতিন ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে প্রচলিত অস্ত্র ব্যবহারে সীমাবদ্ধ থাকবে না রাশিয়া।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে যারা রাশিয়ার পরাজয়ের প্রত্যাশা করছে তারা হয়ত বুঝতে পারছে না যে রাশিয়ার সঙ্গে আধুনিক যুদ্ধ তাদের জন্য খুব ভিন্ন হবে। আমরা আমাদের ট্যাংক তাদের সীমান্তে পাঠাচ্ছি না। কিন্তু এমনটি করার সামর্থ্য আমাদের রয়েছে। সশস্ত্র সরঞ্জাম ব্যবহারে আমরা নিজেদের আটকে রাখব না। সবাইকে এটি মনে রাখতে হবে।
‘ব্যাটল অব স্ট্যালিনগ্রাদ’-এর শেষ হওয়া উদযাপনে ভোলগোগ্রাদে রয়েছেন পুতিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এই লড়াইয়ের নির্ণায়ক ভূমিকা ছিল। এই লড়াইয়ে জার্মানির প্রায় ৯১ হাজার সেনাকে বন্দি করেছিল রাশিয়া। এতে যুদ্ধের গতি বদলে যায়। এই লড়াইয়ে দশ লাখের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। যা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সবচেয়ে ভয়াবহ রক্তপাত।
ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই পুতিন দাবি করে আসছেন, রাশিয়া জাতীয়তাবাদী ও নাৎসীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং এরাই কিয়েভের সরকারের নেতৃত্বে রয়েছে। তবে তিনি এই দাবির পক্ষে কোনও প্রমাণ হাজির করেননি। ইউক্রেন ও পশ্চিমারা এই দাবিকে মিথ্যা অভিহিত করেছে।
বৃহস্পতিবারও সেই সুরে কথা বলেছেন পুতিন। বলেন, এখন দুর্ভাগ্যবশত নাৎসী আদর্শ দেখছি। যা ইতোমধ্যে আধুনিক চেহারা নিয়েছে এবং আবারও আমাদের দেশের নিরাপত্তার জন্য প্রত্যক্ষ হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে।