টানা ১১ মাসের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। দীর্ঘ এই সময় ধরে চলা রুশ এই আক্রমণ মোকাবিলায় বরাবরই পশ্চিমাদের অস্ত্র সহায়তা পেয়ে আসছে কিয়েভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলছেন, রাশিয়াকে মোকাবিলায় ইউক্রেনের দ্রুত আরও অস্ত্রের প্রয়োজন।
তিনি বলেছেন, পূর্বাঞ্চলীয় দোনেতস্ক অঞ্চলে রাশিয়ান বাহিনীর ক্রমাগত আক্রমণের ফলে সৃষ্ট ‘খুব কঠিন’ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইউক্রেনকে দ্রুত নতুন অস্ত্র সরবরাহ করা প্রয়োজন। সোমবার (৩০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার রাতে ভিডিও ভাষণে কথা বলেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। সেখানে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি খুবই কঠিন। বাখমুত, ভুহলেদার এবং দোনেতস্ক অঞ্চলের অন্যান্য সেক্টরে ক্রমাগত রাশিয়ান হামলা হচ্ছে। আমাদের প্রতিরক্ষা শক্তি ভেঙে দিতে সেখানে ক্রমাগত চেষ্টা করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়া দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধ বজায় রেখে আমাদের বাহিনীকে শেষ করে ফেলতে চায়। তাই আমাদের সময়কে কাজে লাগাতে হবে। আমাদের পদক্ষেপকে গতিশীল করতে হবে, সরবরাহের গতি বাড়াতে হবে এবং ইউক্রেনের জন্য নতুন অস্ত্রের দ্বার উন্মুক্ত করতে হবে।’
ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ রোববার বলেন, তার বাহিনী দোনেতস্ক অঞ্চলের পূর্ব অংশে ব্লাহোদাত্নের কাছে একটি আক্রমণ প্রতিহত করেছে। যদিও রাশিয়ার ওয়াগনার প্রাইভেট মিলিটারি গ্রুপ বলছে, তারা সেখানকার গ্রামের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
তবে পরবর্তীতে দেওয়া সামরিক বিবৃতিতে ব্লাহোদাত্নে সম্পর্কে কোনও কথা উল্লেখ করা হয়নি।
এর আগে বুধবার ইউক্রেনের জন্য ভারী ট্যাংক সরবরাহ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তারা ৩১টি অত্যন্ত শক্তিশালী ও অত্যাধুনিক আবরাম ট্যাংক ইউক্রেনকে দেবেন।
হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, এটাই বিশ্বের সবচেয়ে ভালো ট্যাংক। গতবছর মার্কিন কংগ্রেস ইউক্রেনের জন্য ১০০ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সাহায্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই অর্থ দিয়েই এই ট্যাংক ও অন্য সামরিক সরঞ্জাম পাঠানো হবে।
এর আগে জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস জানান, জার্মানি ইউক্রেনকে ১৪টি লিওপার্ড ২ ট্যাংক দেবে। পার্লামেন্টে শলৎস বলেন, তিনি ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন।
জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র আধুনিক ট্যাংক সরবরাহে সম্মত হওয়ার কয়েকদিন পর প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি অস্ত্রের চালান আরও বৃদ্ধির জন্য আবেদন জানালেন।
জেলেনস্কি অবশ্য গত শনিবার ইউক্রেনের প্রায় ৩০০ কিলোমিটার পাল্লার মার্কিন তৈরি এটিএসিএমএস (ATACMS) ক্ষেপণাস্ত্রের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান। তবে ওয়াশিংটন এখনও পর্যন্ত এই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে অস্বীকার করেছে।
জেলেনস্কির একজন উপদেষ্টা বলেছেন, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা চলছে এবং ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর মুখপাত্র বিমান সরবরাহের বিষয়ে আলোচনার কথা বলেছেন।