গুজরাটের ২০০২ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নিয়ে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (বিবিসি) একটি তথ্যচিত্র ইতোমধ্যে ভারতজুড়ে আলোড়ন তুলেছে। দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওই সময়ের ভূমিকা নিয়ে করা তথ্যচিত্রটি টুইটার ও ইউটিউব থেকে সরানোর নির্দেশও দিয়েছে দেশটির সরকার।
যখন এই আলোচনা তুঙ্গে তখন গুজরাট দাঙ্গায় দুই শিশুসহ ১৭ মুসলমানকে হত্যার অভিযোগে করা একটি মামলা থেকে ২২ অভিযুক্তকে খালাস দিয়েছেন গুজরাটের একটি আদালত। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) ওই ২২ অভিযুক্তকে “প্রমাণের অভাবে” খালাস দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে আটজন বিচার চলাকালীন মারা গেছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার বরাতে স্ক্রলডট ইন এক প্রতিবেদনে জানায়, দুই শিশুসহ ১৭ মুসলমানকে হত্যার অভিযোগে ২০০৪ সালে ২২ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে গুজরাট হাইকোর্ট তাদের জামিন দেন। এর পর থেকে তারা বাইরেই আছেন।
অভিযুক্তদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোপালসিংহ সোলাঙ্কি টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, “আদালত প্রমাণপত্রগুলো পরীক্ষা করেছে। যে হাড়গুলো নিহতদের বলে দাবি করা হয়েছে সে বিষয়ে ফরেনসিক পরীক্ষায় কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না।”
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গোধড়ায় একটি ট্রেন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, যার ফলে অযোধ্যা থেকে ফিরে আসা ৫৯ জন হিন্দু তীর্থযাত্রী মারা যান। এই ঘটনার জেরে গুজরাটে সহিংসতা শুরু হয়। ভারতের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গুজরাট দাঙ্গায় ১,০৪৪ জন নিহত হন। যাদের অধিকাংশই মুসলমান। এছাড়া ২২৩ নিখোঁজ এবং ২,৫০০ আহত হয়েছিলেন।
গুজরাটে ২০০২ সালের ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ভারতের বর্তমান হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দাঙ্গার শুরু থেকেই নানা অভিযোগ-সন্দেহ ওঠে যে গুজরাটের তৎকালীন বিজেপির রাজ্য সরকার পরোক্ষভাবে দাঙ্গায় উসকানি দিয়েছে এবং হত্যাযজ্ঞ থামাতে ইচ্ছাকৃতভাবে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়নি। তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্র সরকার ২০০৫ সালে নরেন্দ্র মোদির ভিসার আবেদন পর্যন্ত খারিজ করে দিয়েছিল।