ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হওয়ার মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি ও রপ্তানি হ্রাসের কারণে দেশের অর্থনীতি চাপের মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রবিবার (২২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
২০২২ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক স্থিতিশীলতা মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এবং ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের।
রউফ বলেন, ২০২২ সালের প্রথম দিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের উত্থান ও সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বিশ্বব্যাপী ম্যাক্রো আর্থিক ল্যান্ডস্কেপে মেঘলা পরিবেশ তৈরি করেছিল।
এটি বাংলাদেশসহ উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির বাহ্যিক খাতের উপর একটি গুরুতর চাপের দিকে ঠেলে দেয়। মূলত গ্যাস বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি ও সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হওয়ার কারণে এটি ঘটে।
তিনি বলেন, ত্রৈমাসিক পর্যালোচনা চলাকালে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সামান্য হ্রাস ও মার্কিন ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়নের সাথে গড় মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে।
গভর্নর আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক বহিরাগত সেক্টরের চাপ কমানোর জন্য বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এটি ব্যাংকগুলোর সর্বোচ্চ স্তরের সহযোগিতা ছাড়া যথেষ্ট হবে না।
রউফ বলেন, এছাড়াও বৈদেশিক বাণিজ্য লেনদেনে যথাযথ পরিশ্রম নিশ্চিত করতে হবে যাতে রপ্তানি ও আমদানি এলসিতে যথাযথ মূল্য উঠে আসে।
তিনি বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পদের গুণমান নিশ্চিত করার পাশাপাশি পর্যাপ্ত মূলধন ও তারল্য বজায় রাখতে সতর্ক থাকতে হবে।
ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের বলেন, মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি ও রপ্তানি হ্রাসের কারণে দেশীয় অর্থনীতি কিছুটা চাপের মুখোমুখি হতে পারে।
তিনি বলেন, জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০২২ ত্রৈমাসিকে বাণিজ্য ঘাটতি সংকুচিত হয়েছে। তবে অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স হ্রাস বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে প্রভাব ফেলেছে।
ডেপুটি গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এসব কমাতে বেশ কিছু সহায়ক পদক্ষেপ নিয়েছে।
আবু ফারাহ মো. নাসের বলেন, সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা বজায় রাখতে, আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা বাড়াতে এবং শ্রেণিবদ্ধ ঋণের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ ও অগ্রিম পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে সুবিধাজনক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিস্তৃত ঝুঁকির কারণের মধ্যে, ব্যাংকের মূলধনের পর্যাপ্ততার ওপর প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে ক্রেডিট ঝুঁকি ব্যাংকিং খাতের জন্য বড় ঝুঁকির কারণ হিসেবে রয়ে গেছে।