ইউক্রেনে আক্রমণের পর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞায় যখন রাশিয়ার তেল-গ্যাসের বাজার সংকুচিত হয়ে আসছিল তখন আমদানি বাড়ায় ভারত। রেকর্ড পরিমাণ রুশ জ্বালানি কিনেছিল দেশটি। এবার ভারতের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানও রুশ তেল ও গ্যাস কিনতে যাচ্ছে। শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে দেশ দুটি জানিয়েছে, পারস্পরিক অর্থনৈতিক সুবিধা নিশ্চিত করার শর্তে পাকিস্তান মার্চ মাসের শেষ দিকে রাশিয়া থেকে তেল ও গ্যাস আমদানি শুরু করবে।
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে পশ্চিমা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় রাশিয়া। ইউরোপে রুশ জ্বালানি রফতানি কমেছে উল্লেখযোগ্য মাত্রায়। এই ক্ষতিপূরণের জন্য দেশটি বিকল্প বাজার খুঁজছে। এক্ষেত্রে এশিয়া তাদের প্রথম পছন্দ।
ইসলামাবাদে রাশিয়ার জ্বালানি মন্ত্রী নিকোলাই শুলগিনভের তিন দিনের সফর শেষে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছে, অর্জিত প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্যগুলোর ওপর ঐকমত্যের পরে তেল ও গ্যাস বাণিজ্য লেনদেন এমনভাবে গঠন করা হবে যাতে উভয় দেশের জন্য পারস্পরিক অর্থনৈতিক সুবিধা হয়। প্রক্রিয়াটি মার্চ মাসে শেষ হবে। বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মুদ্রায় তেল ও গ্যাসের মূল্য পরিশোধে সম্মত হয়েছে পাকিস্তান।
পাকিস্তান সরকার ডিসেম্বরের গোড়ার দিকে ঘোষণা করেছিল যে, জ্বালানি সংকটে থাকা পাকিস্তানে কম দামে জ্বালানি তেল রফতানি করতে সম্মত হয়েছে রাশিয়া।
রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল রফতানিতে ডিসেম্বর থেকে ইউরোপীয় সামুদ্রিক নিষেধাজ্ঞা এবং ইইউ, জি-৭ এবং অস্ট্রেলিয়ার নির্ধারিত মূল্যসীমার পদক্ষেপের কারণে মস্কো উল্লেখযোগ্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রতিক্রিয়া হিসেবে রাশিয়া ঘোষণা করেছে যে, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মূল্যসীমা মেনে চলা বিদেশি দেশগুলোতে তারা তেল বিক্রি নিষিদ্ধ করবে।
পাকিস্তান বন্ধুত্বপূর্ণ উপসাগরীয় দেশগুলো থেকে বেশিরভাগ জ্বালানি আমদানির ওপর নির্ভর করে। দুর্বল অর্থনীতি, অব্যবস্থাপনা এবং স্টোরেজ সুবিধার অভাবসহ বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন ধরে দেশটি জ্বালানি ঘাটতিতে পড়েছে।
এই শীতে লোডশেডিং দেশীয় গৃহস্থালি ও শিল্পে প্রভাব ফেলেছে। যার মধ্যে পাকিস্তানের অন্যতম বৃহত্তম শিল্প টেক্সটাইল উৎপাদন এবং কিছু প্ল্যান্ট সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স