আকস্মিক পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন; আসন্ন ফেব্রুয়ারির শুরুতেই পদ ছাড়বেন তিনি।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার তার এ ঘোষণার পরপরই আলোচনা শুরু হয়েছে, কে আসছেন এই প্রধানমন্ত্রীর উত্তরসূরি হিসেবে।
এনডিটিভি বলছে, ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির পরবর্তী নেতা নির্বাচনে ভোট হবে আগামী রোববার। এই নেতাই পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর পদে।
৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকবেন জেসিন্ডা। আর ১৪ অক্টোবর দেশটিতে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জেসিন্ডার পদত্যাগের ঘোষণায় ঘুরেফিরে আলোচনায় এসেছেন তার দলের চারজন।
আলোচনায় থাকা ক্রিস হিপকিন্স ২০০৮ সালে লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত হয়ে প্রথম পার্লামেন্টে যোগ দেন। তিনি ২০২০ সালের নভেম্বরে কোভিড সংক্রান্ত মন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার পর একটি আস্থার প্রতীক হয়ে ওঠেন।
নিজ দক্ষতায় গত বছরের মাঝামাঝি পুলিশ সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হন ক্রিস। এ ছাড়া তিনি শিক্ষা, জনসেবা মন্ত্রী এবং সংসদের নেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
হিপকিন্স পার্লামেন্টে যোগ দেয়ার আগে দুই শিক্ষামন্ত্রীর সিনিয়র উপদেষ্টা ছিলেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্কের অফিসেও দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর বিচারমন্ত্রী কিরি অ্যালানও আছেন প্রধানমন্ত্রী হওয়া দৌড়ে। মাওরি বংশোদ্ভূত এই মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে তিনিই হবেন দেশটির প্রথম সমকামী প্রধানমন্ত্রী। ২০১৭ সালে পার্লামেন্টে যোগ দেয়ার আগে অ্যালান কৃষি শিল্পে একজন ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেছিলেন।
আলোচনায় থাকা মাইকেল উড ২০১৬ সালে উপনির্বাচনে বড় ধরনের জয় দিয়ে পার্লামেন্টে যোগ দেন। ২০২০ সালে তাকে পরিবহন ও কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ২০২২ সালের মাঝামাঝি মন্ত্রিসভার রদবদলে অভিবাসনে যুক্ত হন তিনি।
সংসদ সদস্য হওয়ার আগে উড অকল্যান্ডের সিটি কাউন্সিলে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ফাইন্যান্স সেক্টর ইউনিয়নেও কাজ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এরপর আছেন ২৬ বছরের প্রবীণ সংসদ সদস্য নানিয়া মাহুতাও। ২০২০ সালের নির্বাচনে জয়ের পর নিউজিল্যান্ডের প্রথম মহিলা পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন তিনি। ৫২ বছর বয়সী এই নেতা যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে সম্পর্ক ঠিক করতে জোরালো ভূমিকা পালন করেন।
২০১৭ সালে প্রথম নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হন জেসিন্ডা। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ৩৭ বছর। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিউজিল্যান্ডের দায়িত্ব নেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, পদত্যাগের ঘোষণা দেয়ার সময় কান্না চেপে রেখে জেসিন্ডা বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কঠিন সাড়ে পাঁচ বছর পার করেছেন। তিনিও মানুষ; তার সময় এসেছে সরে দাঁড়ানোর।
সংবাদ সম্মেলনে ৪২ বছর বয়সী জেসিন্ডা বলেন, ‘এ গ্রীষ্মে আশা করেছিলাম শুধু এক বছর নয়, আরেক মেয়াদের জন্য প্রস্তুতির পথ খুঁজে পাব। কারণ এ বছরে এটাই দরকার ছিল। আমি তা করতে পারিনি।
‘আমি জানি এ সিদ্ধান্তের পর অনেক বেশি কথা হবে তথাকথিত আসল কারণ কী, তা নিয়ে…সবচেয়ে আগ্রহব্যঞ্জক যে দৃষ্টিকোণটি পাবেন, সেটি হলো ছয় বছর ধরে বড় কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বুঝেছি আমিও মানুষ।’