জাওয়াদ বোয়াকনেহের মৃত্যুতে চলতি জানুয়ারি মাসে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়াল ১৭ জনে
ফিলিস্তিনি এক শিক্ষককে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ৫৭ বছর বয়সী ওই শিক্ষক মারাত্মক আহত এক যোদ্ধাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে বাড়ির বাইরে বের হয়েছিলেন।
প্যারামেডিকস ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহত ওই ফিলিস্তিনি শিক্ষকের নাম জাওয়াদ বোয়াকনেহ। জেনিন শরণার্থী শিবিরে নিজের বাড়ির বাইরে ছয় সন্তানের জনক এই ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী।
বিবিসি বলছে, ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে রাতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযানের সময় এই ঘটনা ঘটে। এদিকে বোয়াকনেহের মৃত্যুতে বেসামরিক ও যোদ্ধাসহ চলতি জানুয়ারি মাসে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, তাদের সৈন্যরা ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীদের কাছ থেকে প্রচণ্ড গুলির মুখে পড়ে এবং এর জবাবে সেনারাও সরাসরি গুলিবর্ষণ করে। তারা আরও বলেছে, ‘গুলি বিনিময়ের এলাকায়’ একজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হওয়ার খবর সম্পর্কে ইসরায়েলি বাহিনী অবগত এবং ঘটনাটি ‘পর্যালোচনা’ করা হচ্ছে।
নিহত বোয়াকনেহের ছেলে ফরিদ বলেছেন, তারা এক ব্যক্তিকে তাদের বাড়ির বাইরে সাহায্যের জন্য ডাকতে শোনেন। পরে তারা ওই ব্যক্তিকে মারাত্মকভাবে আহত অবস্থায় দেখেন।
রক্তমাখা মেঝেতে দাঁড়িয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘আমার বাবা লোকটিকে সাহায্য করতে, প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে বেরিয়েছিলেন। আমরা তাকে ভেতরে টেনে নিয়ে আসি এবং… তারা (ইসরায়েলি বাহিনী) আমার বাবাকে শরীরের ওপরের অংশে গুলি করে। এসময় তিনি রক্তে আচ্ছন্ন হয়ে যান এবং আমরা তাকে ভেতরে নিয়ে যাই।’
ফিলিস্তিনি প্যারামেডিকরা বলেছেন, নিহত বোয়াকনেহ এবং একজন চিকিৎসক দু’জনেই বাড়ির বাইরে আহত ওই যোদ্ধার কাছে যাচ্ছিলেন।
ফিলিস্তিনি মেডিকেল রিলিফ সোসাইটি (পিএমআরএস) বিবিসিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সেই মুহূর্তে ইসরায়েলি সৈন্যরা তাদেরকে লক্ষ্য করে উচ্চগতিসম্পন্ন গুলি চালায় এবং একটি গুলি শিক্ষকের বুকে লাগে… সেসময় তিনি আহতকে সাহায্য করার চেষ্টা করছিলেন।’
গুলিবিদ্ধ পরে গুলিবিদ্ধ দু’জনকেই হাসপাতালে মৃত ঘোষণা করা হয় বলেও জানায় সংস্থাটি।
এদিকে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২৮ বছর বয়সী আদহাম জাবারিনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। নিহত এই ব্যক্তিকে পরে ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ তার সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
স্থানীয় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি জেনিনে এই গোষ্ঠীর কমান্ডার ছিলেন। ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ গোষ্ঠীকে ইসরায়েল এবং পশ্চিমারা সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছে।