বাংলাদেশের বান্দরবানের তমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়ার শূন্যরেখা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে হামিদ উল্লাহ (২৭) নামে এক রোহিঙ্গা নিহত এবং মহিদ উল্লাহ (২৫) নামে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে বলে দুপুরে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
কক্সবাজারের উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মল আলী জানান, বিকেল পৌনে ৩টার দিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এমএসএফ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক হামিদ উল্লাকে মৃত ঘোষণা করেন। আরেক গুলিবিদ্ধ মুহিব উল্লাহকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। নিহতের মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “কী কারণে বা কেন তারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তা এখনো বলা যাচ্ছে না। দুজনের শরীরে বিশেষ রঙের পোশাক রয়েছে। তারা মিয়ানমারের কোনো বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্য বলে ধারণা করা হচ্ছে।”
বুধবার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোমেন শর্মা সাংবাদিকদের বলেন, “সকাল থেকে তমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় থেমে থেমে গোলাগুলির খবর স্থানীয়দের মাধ্যমে জেনেছি; তা এখনো অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাটি যেহেতু শূন্যরেখায় সেখানে আন্তর্জাতিক রীতিমতে বিজিবিসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার নেই। তারপরও সীমান্তের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং প্রশাসন এ ব্যাপারে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখছে।”
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, “সকাল থেকে অব্যাহত গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। সেখানে কী হচ্ছে বলা যাচ্ছে না। ঘটনায় স্থানীয়রা চরম আতঙ্কে রয়েছে।”
শূন্যরেখার ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, “সকালে সশস্ত্র গোষ্ঠী রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশনের (আরএসও) সদস্যরা কোনারপাড়া শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় এসে সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়ে। পরে তা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরেও ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে আধিপত্য বিস্তারের জেরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে প্রকৃত কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”
প্রসঙ্গত, দুই মাস আগে মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে দেশটির সামরিক বাহিনীর দ্বন্দ্ব বাধে। এর জেরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপাড়ে ব্যাপক অভিযান চালায় সিময়ানমারের সেনাবাহিনী। গত এক মাস ধরে সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ফের সীমান্ত পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।