টানা প্রায় ১১ মাস ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। দীর্ঘ সময় ধরে রুশ বাহিনীর এই অভিযানে মস্কোর পাশে বরাবরই থেকেছে বেলারুশ। আর এই পরিস্থিতিতে সোমবার (১৬ জানুয়ারি) থেকে যৌথ বিমান মহড়া শুরু করছে রাশিয়া ও বেলারুশ।
আর এতেই নতুন করে স্থল আক্রমণের শিকার হওয়ার শঙ্কায় পড়েছে কিয়েভ। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া ও বেলারুশ সোমবার থেকে যৌথ বিমান মহড়া শুরু করতে যাচ্ছে। আর এই সুযোগে মস্কো তার মিত্রকে ইউক্রেনে নতুন স্থল আক্রমণ শুরু করতে ব্যবহার করতে পারে বলে কিয়েভ ও তার পশ্চিমা মিত্রদের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি করেছে।
তবে মিনস্ক বলেছে, রাশিয়া ও বেলারুশের যৌথ এই মহড়া প্রতিরক্ষামূলক। অবশ্য গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন শুরুর পর থেকে বেলারুশ একাকী এবং রাশিয়ার সাথে যৌথভাবে অনেকগুলো সামরিক মহড়া চালিয়েছে।
এমনকি মস্কোর সাথে একত্রে বেলারুশও অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে মহড়া জোরদার করছে।
রয়টার্স বলছে, বেসরকারি টেলিগ্রাম মিলিটারি মনিটরিং চ্যানেলগুলোতে চলতি বছরের শুরু থেকে বেলারুশে একের পর এক যোদ্ধা, হেলিকপ্টার এবং সামরিক পরিবহন বিমানের আসার বিষয়টি রিপোর্ট করছে। এর মধ্যে কেবল রোববারই আটটি ফাইটার এবং চারটি কার্গো প্লেন বেলারুশে পৌঁছেছে।
রয়টার্স অবশ্য এসব প্রতিবেদন যাচাই করতে সক্ষম হয়নি। তবে বেলারুশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শুধু বলেছে, রাশিয়ার বিমান বাহিনীর ‘ইউনিট’ বেলারুশে পৌঁছেছে।
এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ‘কৌশলগত বিমান মহড়ার সময়, বেলারুশের সশস্ত্র বাহিনীর বিমান বাহিনী এবং বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনীর সকল বিমানঘাঁটি ও প্রশিক্ষণ ক্ষেত্র এই মহড়ায় জড়িত থাকবে।’
বেলারুশের দক্ষিণ সীমান্তে ইউক্রেনের অবস্থান। রোববার টেলিগ্রাম অ্যাপে বেলারুশীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি পোস্ট অনুসারে- বেলারুশিয়ান নিরাপত্তা পরিষদের প্রথম ডেপুটি স্টেট সেক্রেটারি পাভেল মুরাভেইকো বলেছেন, বেলারুশের দক্ষিণ সীমান্তের পরিস্থিতি ‘খুব শান্ত নয়’ এবং ইউক্রেন বেলারুশকে ‘উস্কানি’ দিয়ে চলেছে।’
মুরাভেইকো আরও বলেছেন, ‘আমরা আমাদের বারুদ নিষ্ক্রিয় রেখে সংযম এবং ধৈর্য বজায় রাখছি। আমাদের কাছে প্রয়োজনীয় বাহিনী এবং উপায় রয়েছে যা আমাদের ভূখণ্ডে যেকোনও আগ্রাসন বা সন্ত্রাসী হুমকির বিরুদ্ধে জবাব দেবে।’
অন্যদিকে ইউক্রেনও ক্রমাগত বেলারুশ থেকে সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছে এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত সপ্তাহে বলেন, ইউক্রেনকে অবশ্যই বেলারুশের বিরুদ্ধে তার সীমান্তে প্রস্তুত থাকতে হবে।
অবশ্য ক্রেমলিন অস্বীকার করেছে যে, তারা ইউক্রেনের সংঘাতে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোকে চাপ দিচ্ছে। যদিও মিনস্ক বলেছে, তারা যুদ্ধে নামবে না।
এই পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি পশ্চিমা মিত্রদের ‘রাশিয়ান সন্ত্রাস’ এবং বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রুশ হামলা বন্ধ করতে আরও অস্ত্র সরবরাহ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আর তাই পশ্চিমা শক্তিগুলো কিয়েভে যুদ্ধ ট্যাংক পাঠানোর কথা বিবেচনা করছে। এছাড়া আগামী শুক্রবার জার্মানির রামস্টেইনে ইউক্রেনের মিত্রদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে কিয়েভের মিত্র সরকারগুলো তাদের সামরিক সহায়তা নিয়ে আরও প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করবে।