ইউক্রেনজুড়ে নতুন করে ব্যাপক মিসাইল হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে পূর্বাঞ্চলীয় শহর ডিনিপ্রোতে কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন। মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় এই শহরটির একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে রুশ মিসাইল আঘাত হানলে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।
এছাড়া শনিবারের এই হামলায় রাজধানী কিয়েভ, খারকিভ এবং ওডেসাসহ আরও কয়েকটি শহরেও রুশ মিসাইল আঘাত হেনেছে। রোববার (১৫ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিবিসি বলছে, রুশ মিসাইল হামলার পর ইউক্রেনের বেশিরভাগ অংশই এখন জরুরি ব্ল্যাকআউটের মধ্যে রয়েছে। মূলত শনিবারের হামলায় বেশ কয়েকটি শহরে বিদ্যুতের অবকাঠামোতে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে।
এর আগে, যুক্তরাজ্য কিয়েভের প্রতিরক্ষায় সহায়তা করতে ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা পাঠানোর ঘোষণা দেয়। জবাবে রাশিয়া জানায়, ইউক্রেনকে আরও অস্ত্র সরবরাহ করলে রুশ অভিযান আরও তীব্রতর হবে এবং আরও বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটবে।
তবে শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা প্রয়োজনীয় অস্ত্র সরবরাহ করলেই বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রাশিয়ার আক্রমণ বন্ধ করা যেতে পারে।
শনিবার রাতের ভাষণে তিনি বলেন, রাশিয়ার নিক্ষেপ করা ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্রর মধ্যে ২০টিরও বেশি ইউক্রেনীয় সেনারা ধ্বংস করেছে। জেলেনস্কি বলেন, ‘এর জন্য কী দরকার? যে অস্ত্রগুলো আমাদের মিত্রদের ডিপোতে রয়েছে এবং সেগুলোর জন্য আমাদের সৈন্যরা এত অপেক্ষা করে আছে।’
বিবিসি বলছে, শনিবার নতুন করে হওয়া রুশ হামলায় পূর্বাঞ্চলীয় শহর ডিনিপ্রোতে একটি নয় তলা ভবনে মিসাইল আঘাত হানে। এতে কমপক্ষে ১২ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি ভবনের বেশ কয়েকটি তলা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। এছাড়া হামলায় ১৪ শিশুসহ ৭৩ জন আহত হয়েছেন বলে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলেছেন।
নিজের ভাষণে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ডিনিপ্রোতে ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কারের কাজ সারা রাত অব্যাহত থাকবে: ‘আমরা প্রতিটি ব্যক্তির জন্য, প্রতিটি জীবনের জন্য লড়াই করছি।’
কর্মকর্তারা বলছেন, এ পর্যন্ত ছয় শিশুসহ ভবন থেকে ৩৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। অবশ্য আবাসিক এই অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকটি কেন হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে সে সম্পর্কে এখনও কোনও তথ্য নেই। কারণ এই ভবনটি নিকটতম বিদ্যুৎ অবকাঠামো থেকে কিছুটা দূরে।
অবশ্য বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, ডিনিপ্রো অ্যাপার্টমেন্ট হামলায় নিহতদের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে শঙ্কা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। একইসঙ্গে তিনি তার পশ্চিমা মিত্রদের কাছে ‘রাশিয়ান সন্ত্রাস’ এবং বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা বন্ধ করতে আরও অস্ত্রের জন্য নতুন করে আবেদন জানিয়েছেন।
এদিকে ইউক্রেনে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ব্রিজেট ব্রিঙ্কসহ কিয়েভের অন্যান্য মিত্ররা শনিবারের রুশ হামলার নিন্দা করেছেন। ডিনিপ্রোতে হওয়া হামলাকে ‘ভয়াবহ’ উল্লেখ করে টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় ব্রিঙ্ক লিখেছেন, ‘ইউক্রেনের আত্মরক্ষায় সাহায্য করার জন্য আরও নিরাপত্তা সহায়তা আসছে।’