ফিলিস্তিনের অধিকৃত ভূখণ্ডে প্রাণঘাতী অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) ইসরায়েলি বাহিনী তিন ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পশ্চিম তীরের উত্তরে জেনিনের কাছে কাবাতিয়া শহরে একটি অভিযানের সময় ইসরায়েলি সৈন্যদের তাজা গুলিবর্ষণে নিহত হয়েছেন দুই ফিলিস্তিনি। তারা হলেন- ২৫ বছর বয়সী হাবিব কামিল এবং ১৮ বছর বয়সী আব্দুলহাদি নাজাল।
এছাড়া ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিহত অপর ব্যক্তিকে ৪১ বছর বয়সী সামির আসলান বলে শনাক্ত করেছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গত বছরের শুরু থেকে এই অঞ্চলে প্রায়ই রাতের বেলা অভিযান চালাচ্ছে। এরই ধারাবিাহিকতায় তারা শেষ রাতের দিকে কালান্দিয়া শরণার্থী শিবিরে প্রবেশ করে এবং ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
নিহত আসলানের বোন নওরা আসলান বলেছেন, ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী তার ভাইয়ের ১৮ বছর বয়সী ছেলে রামজিকে গ্রেপ্তার করতে রাত আড়াইটায় তাদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। রামজিকে সৈন্যরা নিয়ে যাচ্ছিল। তার বাবা তাকে বাঁচাতে ছুটে আসেন, এসময় একজন ইসরায়েলি স্নাইপার তাকে গুলি করে।
নওরা আরও বলেন, ঘটনার পর আসলানের স্ত্রী অ্যাম্বুলেন্স ডেকেছিলেন। কিন্তু ইসরাইলি সেনাবাহিনী চিকিৎসকদের প্রথমে বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেয়। প্রায় ২০ মিনিট পরে আসলানকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা সম্ভব হয়।
যদিও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, জঙ্গি হামলার পরিকল্পনার সন্দেহভাজন ফিলিস্তিনি মুহাম্মদ আলাউনাকে গ্রেপ্তার করতে নিরাপত্তা বাহিনী কাবাতিয়ায় প্রবেশ করেছে। তারা বলেছে, সৈন্যরা অভিযানের সময় বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে গুলি করেছে।
এদিকে বৃহস্পতিবারের এই প্রাণহানির ঘটনায় চলতি বছর পশ্চিম তীরে মোট ৯ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হলো। যার মধ্যে গত বুধবার পশ্চিম তীরে পৃথক ঘটনায় দুই ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার ঘটনাও রয়েছে।
ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠন বি’সেলিম জানিয়েছে, ২০২২ সালে পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলি বাহিনীর দেওয়া আগুনে প্রায় ১৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছিল। ২০০৪ সালের পর থেকে সবচেয়ে ভয়াবহ বছর ছিল ২০২২।
ইসরায়েলের সর্বকালের সবচেয়ে ডানপন্থি নতুন অতিজাতীয়তাবাদী ও অতিঅর্থোডক্স সরকার তার আইন প্রণয়ন এজেন্ডা তৈরি করছে। যা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর অবস্থান নেওয়ার এবং পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতি নির্মাণের জন্য সহিংসতা আরও বাড়াবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।