কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যু ঘিরে ইরানজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে বিচারের মুখোমুখি করছে দেশটি। এরই মধ্যে চলতি মাসে দুইজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত পাঁচ নারীসহ অন্তত ১০০ বিক্ষোভকারী এখন মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের হুমকিতে রয়েছেন। নরওয়েভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) নামের একটি সংস্থা জানিয়েছে, এসব মানুষ নিজেদের পক্ষে কোনো আইনজীবী নিয়োগ করতে পারেননি। ফলে তাঁরা ন্যায়বিচার থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত হয়েছেন। খবর বিবিসির।
আইএইচআর বলছে, দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার অপেক্ষায় যাঁরা রয়েছেন তাঁদের প্রকৃত সংখ্যা পাওয়া কঠিন। কারণ, এসব পরিবারগুলোকে চুপ থাকার জন্য চাপ দিচ্ছে ইরান সরকার। মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই বিচারকে ‘প্রহসন’ বলে অভিহিত করেছে।
দণ্ডিতদের মধ্যে তরুণ, শিক্ষক কিংবা প্রকৌশলীসহ নানা পেশার মানুষ রয়েছেন। এঁদেরই দুইজন মহসেন শেকারি ও মাজিদরেজা রাহনাভার্দ। তাঁদের বয়স সবে ২০ পেরিয়েছে। ওই বিক্ষোভে অংশ নেওয়াকে দেশটির সরকার সৃষ্টিকর্তার বিরুদ্ধে শত্রুতার অভিযোগ এনে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে বিপ্লবী আদালতে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে দু’জনকেই।
আইএইচআরের রিপোর্টে বলা হয়, যে ১০০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তাঁদের কেউই নিজেদের পক্ষে কোনো আইনজীবী নিয়োগ এবং বিচারের যথাযথ প্রক্রিয়ায় যেতে পারেননি।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর যুবক মোহাম্মদ ঘোভাদলু। তাঁর বিরুদ্ধে তেহরানে একটি সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁর মা জানিয়েছেন, এ তরুণ মানসিকভাবে অসুস্থ। তাঁকে দ্রুতবিচারের নামে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, কোনো আইনি সহায়তাও পায়নি সে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও এসব বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে পাঁচ নারী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মজগান কাভৌসি নামের এক কুর্দি শিক্ষক ও মানবাধিকার কর্মীও মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি। এক কৌঁসুলি জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে মানুষকে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে কাভৌসির বিরুদ্ধে।