মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ফের বড় আকারের তুষারঝড় বয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর দিয়ে। বুধবারের সেই ঝড়ের জেরে তাপমাত্রা ব্যাপকভাবে নেমে যাওয়ায় ঠান্ডায় জমে দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৫৯ জনের।
ঝড়ের তাণ্ডব সবচেয়ে বেশি ছিল দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য নিউইয়র্কের পশ্চিমাঞ্চল। মৃত এই ৫৯ জনের মধ্যে ৩৭ জনই নিউইয়র্কের।
এছাড়া ঝড়ের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিমানবন্দরে বাতিল হয়েছে আড়াই হাজারেরও বেশি ফ্লাইট। বিমান পরিষেবা প্রদানকারী বিভিন্ন সংস্থা জানিয়েছে, আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো ফ্লাইট ছাড়া সম্ভব নয়।
বুধবার দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের বিমানবন্দরে হাজার হাজার যাত্রীকে অসহায়ভাবে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। তারা সবাই বাতিল হওয়া বিভিন্ন ফ্লাইটের যাত্রী। যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে বিমানবন্দরে অপেক্ষমান যাত্রীদের অসংখ্য ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এখন বড়দিনের ছুটি চলছে; এমনিতে এ সময় দেশটিতে তীব্র শীত থাকলেও তুষারঝড়ের প্রভাবে তাপমাত্রার পারদ যে পর্যায়ে নেমেছে, এমন এর আগে দেখা যায়নি বলে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
ঝড়ের জেরে তাপমাত্রার অতিরিক্ত নেমে যাওয়ায় ঘর গরম রাখতে বিদ্যুতের চাহিদা বেশ কয়েগুণ বেড়ে গেছে, ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় সৃষ্টি হয়েছে বিপুল চাপ। এই চাপের কারণে নিউইয়র্ক, টেক্সাস, ফ্লোরিডাসহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটেছে। লাখ লাখ মানুষ বর্তমানে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছেন।
এর আগে ২২ ডিসেম্বর দেশটিতে প্রায় ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার ব্যাপ্তির এক ঝড় বয়ে গিয়েছিল। সে সময় সরবরাহ ব্যবস্থায় চাপের কারণে বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছিলেন ১৭ লাখ মানুষ। পরে গত কয়েকদিনে সরবরাহকর্মীদের তৎপরতায় দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে ফিরতে শুরু করেছিল বিদ্যুৎ।
কিন্তু বুধবারের ঝড়ে ফের বিভ্রাট সৃষ্টি হয়েছে সরবরাহ ব্যবস্থায়। সেই সঙ্গে একদিনে প্রায় ৬০ জনের মৃত্যুকে উদ্বেগজনক বলেও উল্লেখ করেছেন টেক্সাস, ফ্লোরিডাসহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
ফ্লোরিডার এরিয়ে জেলার শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা মার্ক পোলনকার্জ এক টুইটবার্তায় বলেন, ‘ঠাণ্ডায় জমে মৃত্যু হওয়া মানুষের প্রকৃত সংখ্যা সরকারি সংখ্যার চেয়ে বেশি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সার্বিক পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক।’