রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধ থমকে আছে বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা প্রধান কায়রাইলো বুদানোভ। তিনি জানিয়েছেন, এ যুদ্ধে কোনো পক্ষেরই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। এমন পরিস্থিতিতে কিয়েভের প্রয়োজন পশ্চিমাদের অত্যাধুনিক অস্ত্র।
বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানিয়েছেন ইউক্রেনের গোয়েন্দা প্রধান। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি থমকে আছে। যুদ্ধ আগাচ্ছে না। ’
গত নভেম্বরে ইউক্রেনের সেনারা খেরসন শহর পুনর্দখল করে। এখন ইউক্রেন-রুশ সেনাদের মূল লড়াইটা হচ্ছে পূর্বদিকের অঞ্চল দোনেৎস্কের বাখমুতে। এছাড়া ইউক্রীর অন্যান্য অঞ্চলেও রুশ সেনারা রক্ষণাত্মক অবস্থানে রয়েছে। অন্যদিকে শীতের কারণে ইউক্রেনীয় সেনাদের অভিযান কমে গেছে।
যুদ্ধে রাশিয়া ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে আছে উল্লেখ করে ইউক্রেনের গোয়ন্দা প্রধান বলেন, ‘তাদের (রাশিয়া) অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আর ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে রাশিয়া আবারও সেনা বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে।’
কয়েকটি অঞ্চলে ইউক্রেনের সেনাদের কাছে পর্যাপ্ত রসদ নেই জানিয়ে বুদানোভ বলেন, ‘সবদিক দিয়ে আমরা রুশ সেনাদের পরাজিত করতে পারব না। তারাও পারবে না। আমরা এখন নতুন অস্ত্র এবং অত্যাধুনিক অস্ত্রের চালানের অপেক্ষায় আছি।’
চলতি মাসের শুরুতে ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তারা জানান, রাজধানী কিয়েভ দখলে ২০২৩ সালের শুরুতে বেলারুশ থেকে আবারও হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। আর এ হামলায় যুক্ত হবে রাশিয়ার কয়েক হাজার নতুন সেনা, তবে ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা বুদানোভ এসব তথ্য উড়িয়ে দিয়েছেন। তার মতে, যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে ইউক্রেনের সেনারা যাতে সীমান্তের দিকে চলে যায় তার জন্য এটি ফাঁদ পেতেছে রাশিয়া।
তিনি জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে রুশ সেনাদের বহনকারী একটি ট্রেন থামে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পর এটি আবার ফিরে আসে।
বুদানোভ বলেন, ‘দিনের বেলাই রাশিয়া এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে যাতে সবাই দেখতে পায়,তবে বেলারুশ থেকে হামলার কোনো শঙ্কা নেই।’
কয়েকদিন আগেই বেলারুশের রাজধানী মিনস্ক সফর করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিন বছরের মধ্যে এটি ছিল তার প্রথম বেলারুশ সফর। বিশ্লেষকদের শঙ্কা ছিল, ওই সফরে ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর জন্য বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোকে রাজি করানোর চেষ্টা করেছেন পুতিন।
বেশ কয়েকটি এলাকার দখল হারানোর পর অক্টোবর থেকে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামো লক্ষ্য করে ক্ষেপনাস্ত্র ও ড্রোন হামলা শুরু করে রাশিয়া।
এ নিয়ে ইউক্রেনের গোয়েন্দা প্রধান বলেন, রাশিয়ার এ হামলা অব্যাহত থাকবে, কিন্তু হামলার তীব্রতা কমে যাবে। কারণ রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ফুরিয়ে আসছে।
ইউক্রেনের অভিযোগ, ইরানের ড্রোন দিয়ে বেশিরভাগ হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। যদিও দেশটি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এ নিয়ে বুদানোভ বলেন, ‘ইরান ড্রোন দেয়ার কথা অস্বীকার করেছে। কারণ ক্ষেপণাস্ত্র দিলে পশ্চিমারা তাদের ওপর আরও কঠোর হবে। এতে ইরানের ভঙ্গুর অর্থনীতির অবস্থা আরও খারাপ হবে।’