একজন বিধায়ক যখন আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসবের আয়োজন করে তখন বোঝা যায় সংস্কৃতির সর্বোত্তম চর্চা কোন পর্যায়ে আবর্তিত হচ্ছে। তিনি এককালের সারা জাগানো রাজ্যের মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা। তার পৃষ্ঠপোষকতায় কাকদ্বীপ আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব ২০২২ অনুষ্ঠিত হলো কাকদ্বীপের বিদ্যাসাগর সাধারণ পাঠাগারের প্রাঙ্গণে।
কাকদ্বীপের সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরার পৃষ্ঠপোষকতায় এবং কবি সৌমিত বসুর আহ্বানে এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারত এবং বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবি-সাহিত্যিকেরা। দুই দিনব্যাপী চলা এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন বিখ্যাত কবি মাহমুদ হাফিজ, সেলি সেনগুপ্তা, কুশল ভৌমিক, নাহার আহমেদ প্রমুখ। এ রাজ্যের কবি সাহিত্যিক ছাড়াও উড়িষ্যা, আসাম, দিল্লি, ছত্রিশগড় সহ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে নামজাদা কবিরা যোগদান করেছিলেন এ দিনের এই উৎসবে। ত্রিপুরা থেকে এই উৎসবে এসেছিলেন বিখ্যাত সাহিত্যিক ও অনুবাদক শ্যামল ভট্টাচার্য।
এ রাজ্যের বিশিষ্ট কবি ও আলোচকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ও সাহিত্যিক ড: গোবিন্দ সরকার, কবি রফিক উল ইসলাম, কবি অবশেষ দাস, কবি অংশুমান কর, কবি সত্যপ্রিয় মুখোপাধ্যায়, কবি সোমনাথ রায়, কবি অমিতাভ রায়, কবি অরুণ পাঠক সহ প্রায় দুই শতাধিক কবি এই উৎসবে হাজির হয়েছিলেন। মঞ্চ থেকে বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা বলেন, “সাহিত্য সংস্কৃতির প্রতি আমার আজন্ম টান। এই ধরনের উৎসব করবার ইচ্ছা অনেক আগের থেকেই ছিল। বিভিন্ন পরিসরে সেই আয়োজন আগেও করেছি। তবে আগামী দিনে আরো বিরাট করে এই উৎসবের আয়োজন করা হবে। সেই আয়োজন হবে বাংলা ও বাঙালির হৃদয়ের আন্তরিকতায়”। পশ্চিমবাংলার স্বনামধন্য সাহিত্যিক অবশেষ দাস বলেন, “দক্ষিণবঙ্গ কবিতা চর্চায় চিরকাল অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। কাকদ্বীপ কবিতা চর্চার ইতিহাসকে অনেক আগেই গর্বিত করেছে। কবি শামসুল হক বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে কাকদ্বীপের নাম সোনা দিয়ে বাঁধিয়ে দিয়েছে। কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের মত প্রথিতযশা কবি শামসুল হকের নামে ছড়া লিখেছেন। সেই মাটিতে আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব হওয়াটাই স্বাভাবিক।”
সমগ্র আয়োজনের নেপথ্যে যিনি সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন তিনি কবি সৌমিত বসু। এই মুহূর্তে দুই বঙ্গের অত্যন্ত আলোচিত এক নাম। এই উৎসবের হৃদপিণ্ড যেমন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও বর্তমান কাকদ্বীপের বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা তেমন এই উৎসবের মস্তিষ্ক কবি সৌমিত বসু। এই কবিতা উৎসব ঘিরে সমগ্র কাকদ্বীপ জুড়ে একটি শান্তিপূর্ণ বাতাবরণের বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে। এই বার্তা শুধু কাকদ্বীপের নয়, সারা রাজ্যবাসীর জন্য অত্যন্ত সুখকর।