দশকেরও বেশি সময় ধরে সাগরদ্বীপ থেকে প্রকাশিত বোধন পত্রিকার বর্ষীয়ান সম্পাদক মানিক চন্দ্র পাহাড়ীর লেখা কবিতার বই প্রকাশ উপলক্ষে সাগর ইউথ ওয়েলফেয়ারের রুদ্রনগর কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা ও সাগরদ্বীপের বিশিষ্ট কবি- সাহিত্যিকরা।
এদিনের অনুষ্ঠানের সভা মঞ্চ আলোকিত করেছিলেন গঙ্গাসাগরের বিধায়ক তথা রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা। উদ্বোধনী সঙ্গীত ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয় মানিক চন্দ্র পাহাড়ির লেখা বই ‘সাগর উর্মী অরণ্য’। মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা ছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের বর্ষীয়ান অধ্যাপক ড. গোবিন্দ সরকার।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন স্বনামধন্য কবি অবশেষ দাস, কবি রফিকুল ইসলাম, কবি অরুণ পাঠক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সাগরদ্বীপের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাগর মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রবীর কুমার খাটুয়া, শিক্ষক জয়দেব দাস, শিক্ষক শান্তনু গায়েন, শিক্ষক মধুসূদন ঘোড়াই, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অশ্বিনী কুমার গায়েন প্রমুখ।
সমগ্র অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাহিত্যিক ভাগ্যধর বারিক। অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক মন্ডলীর মধ্যে ছিলেন সুকেতু মাইতি, মনোরঞ্জন পাহাড়ী, বিভীষণ জানা, সুকুমার প্রামাণিক প্রমুখ। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ড. গোবিন্দ সরকার বলেন “সাগরদ্বীপের পূণ্যভূমিতে এহেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে তিনি আনন্দিত।” সেই সঙ্গে মানিক চন্দ্র পাহাড়ির এই বইয়ের প্রশংসা করে তিনি বলেন “বইটি যেভাবে সাগরদ্বীপের মানুষের জীবন-জীবিকা, সাগরদ্বীপের মানুষের কথা তুলে ধরেছে যা নিঃসন্দেহে সাগরদ্বীপের সাহিত্যের ইতিহাসে একটা গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ হতে চলেছে।” প্রকাশিত বই ‘ সাগর উর্মী অরণ্যে ‘র লেখক মানিক চন্দ্র পাহাড়ী বলেন ” মানবিক বোধ, মানবতাকে প্রাধান্য দিয়ে তার এই কবিতা লেখা এবং তা তিনি এই বইয়ের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। এছাড়াও তার বইয়ে রয়েছে সাগরদ্বীপ নিয়ে নানা কথা।” এই বই পাঠকের কাছে অনেক ভালো লাগবে বলে আশাবাদী তিনি।
‘সাগর উর্মী অরণ্য’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, “তিনি বরাবরই সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক তাই এহেন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত। সেই সঙ্গে তিনি সাগরের মাটিতে এধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করার অনুষ্ঠানের আয়োজকদের প্রশংসাও করেন এবং সাগরদ্বীপে এসে অনুষ্ঠানে যোগদান করার জন্য আমন্ত্রিত অতিথিদের ধন্যবাদও জানান। সেই সঙ্গে তিনি ভবিষ্যতে তার নিজ উদ্যোগে সাগরদ্বীপে আনুষ্ঠানিকভাবে সাহিত্য উৎসব আয়োজনের প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। অতি ব্যাস্ততার মাঝেও অনুষ্ঠান চলাকালীন দীর্ঘ সময় ধরে মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরার উপস্থিতি সহজেই বুঝিয়ে দেয় শিক্ষা ও সাহিত্যের প্রতি তাঁর গভীর শ্রদ্ধা ও পৃষ্ঠপোষকতার কথা। মানিক চন্দ্র পাহাড়ী শুধুমাত্র লেখক নন তিনি বড় মাপের সমাজসেবীও সাগরদ্বীপে তার প্রভাব ও তাঁর প্রতি সাধারণ মানুষের ভালোবাসা অত্যন্ত গভীর। তাঁর এহেন বই প্রকাশে স্বভাবতই খুশি সাগরের সাধারণ মানুষও।