১৯০ জন রোহিঙ্গাকে নিয়ে আন্দামন সাগরে ভাসছে একটি নৌকা। তাদের উদ্ধারে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। তবে, সে আহ্বানের এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও তাদের করছে না কোনো দেশ।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, প্রায় একমাস ধরে নৌকাটি আন্দামান সাগর ও বঙ্গোপসাগরে ভাসছে। নৌকাটির খাবার ও পানি প্রায় শেষ। ইতোমধ্যে নৌকায় ভাসমান ২০ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রসান্ত মহাসাগরীয় এলাকার ডিরেক্টর ইন্দ্রিকা রাতওয়াতে বলেন, “এই ভয়াবহ ঘটনার অবসান হওয়া দরকার। এরা সকলেই মানুষ। ওই অঞ্চলের দেশগুলোর উচিত এই বিপন্ন মানুষগুলোর প্রাণ বাঁচানো।”
জাতিসংঘ জানায়, রোহিঙ্গাদের এই নৌকাটিকে প্রথমে দেখা যায় থাইল্যান্ডের কাছে সমুদ্রে। তারপর নৌকাটিকে দেখা যায় ইন্দোনেশিয়ার কাছে। এখন তা ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে রয়েছে।
তাদের উদ্ধারে এই অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতি বারবার আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। গত সপ্তাহে তারা ভারতকে অনুরোধ জানায়, ভাসমান রোহিঙ্গাদের যেন ইন্ডিয়ান মেরিন রেসকিউ সেন্টারে নিয়ে আসা হয়। তবে সে অনুরোধেও সাড়া মেলেনি।
এদিকে ইন্দ্রিকা রাতওয়াতে জানিয়েছেন, ২০২২-এ বঙ্গোপসাগর ও আন্দামান সাগরে অন্ততপক্ষে দুইশজন মারা গেছেন। তিনি জানান, তাদের পক্ষে প্রতিটি ঘটনা যাচাই করা খুবই কঠিন। কিন্তু প্রতিটি দেশের দায়িত্ব আছে, মানবিকতার খাতিরে এই মানুষগুলোকে তাদের দেশে নামতে দেওয়া।
তিনি বলেন, “খুব দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, এই জলপথকে এ বছরের অন্যতম ভয়াবহ জলপথ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।”
একদিন আগেই জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ টম অ্য়ান্ড্রুজ একটি বিবৃতি দিয়ে বলেন, “গোটা বিশ্ব যখন নতুন বছর নিয়ে ব্যস্ত, তখন একদল বেপরোয়া রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ এবং বাচ্চা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে সমুদ্রে চলাচলের অনুপযুক্ত নৌকা নিয়ে সমুদ্রে ভাসছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না।”
এদিকে, প্রায় এক মাস ধরে সাগরে ভেসে থাকার পর রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) ৫৮ রোহিঙ্গাকে বহনকারী একটি নৌকা ইন্দোনেশিয়ার একটি দ্বীপে ভিড়েছে।
দুই সপ্তাহ আগে ভিয়েতনামের তেল সংস্থার একটি জাহাজ ডুবন্ত নৌকা থেকে ১৫৪ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে। তারা দলটিকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়।
(সূত্র: ডয়চে ভেলে)