আফগানিস্তানে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তালেবান কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ছাত্রী নিষিদ্ধ করার নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক ও সৌদি আরব। তালেবান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী কাতারের সমালোচনার পর দেশ দুটি এই নিন্দা জানালো। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু বৃহস্পতিবার বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞা ইসলামিক বা মানবিক নয়।
ইয়েমেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি তালেবান কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এই নিষেধাজ্ঞা বাতিল করার জন্য।
তিনি বলেন, নারীদের শিক্ষায় ক্ষতি কোথায়? এতে আফগানিস্তানে কী ক্ষতি হবে? এর কোনও ইসলামি ব্যাখ্যা আছে? আমাদের ধর্ম ইসলাম শিক্ষাবিরোধী নয়; শিক্ষা ও বিজ্ঞানের প্রতি উৎসাহ দেয় ইসলাম।
সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আফগানিস্তানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তে বিস্ময় এবং হতাশা প্রকাশ করেছে। বুধবার শেষ রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসলামি দেশগুলোর জন্য এই সিদ্ধান্ত বিস্ময়কর।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) আফগানিস্তানে নারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির বর্তমান তালেবান সরকার। উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে এবং অবিলম্বে তা কার্যকর করা হবে। তিন মাস আগেই দেশটিতে হাজার হাজার নারী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসেছিল। এমন অবস্থায় নতুন করে তালেবান কর্তৃপক্ষ এই নির্দেশ জারি করে।
গত বছর পশ্চিমা সমর্থিত আশরাফ গণির সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতায় বসে সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান। তখন থেকেই নারীদের শিক্ষার বিষয়ে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে তারা। একই বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের আলাদা শ্রেণিকক্ষে বসার নিয়ম চালু করে। এমনকি পশু চিকিৎসা, ইঞ্জিনিয়ারিং, অর্থনীতি, কৃষি এবং সাংবাদিকতায় অধ্যয়নের বিষয়ে নারীদের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। তালেবানের এমন সিদ্ধান্তে কঠোর সমালোচনা হয় বিশ্বজুড়ে।