ইউক্রেনে সংঘাতের জন্য দায়ী তৃতীয় শক্তি : পুতিন

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন

গত প্রায় ১১ মাস ধরে ইউক্রেনে যে যুদ্ধ চলছে— সেজন্য রাশিয়া নয়, বরং ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা দায়ী বলে মনে করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনকে এখনও ‘ভাতৃপ্রতিম’ দেশ হিসেবে বিবেচনা করেন বলেও দাবি করেছেন তিনি।

বুধবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এখন দুই দেশের মধ্যে যা চলছে, তা অবশ্যই একটি ব্যাপক শোকাবহ ব্যাপার এবং এই শোকের অংশীদার রাশিয়া ও ইউক্রেন— উভয়ই।’

‘আজকের এই পরিস্থিতি আমাদের দোষে সৃষ্টি হয়নি…. আমরা এজন্য দায়ী নই। ইউক্রেনের শুভাকাঙ্ক্ষী প্রতিবেশী রাষ্ট্র হওয়ার জন্য আমরা বছরের পর বছর চেষ্টা করেছি। বিভিন্ন সময়ে আর্থিক ঋণের জন্য দেশটিকে প্রস্তাব দিয়েছি, কম দামে তাদের কাছে জ্বালানিও বিক্রি করতে চেয়েছি। রাশিয়ার জনগণ চিরদিনই ইউক্রেনীয়দের ভাইয়ের মতো বিবেচনা করে আসছি এবং এখনও ব্যক্তিগত ভাবে আমি ইউক্রেনকে ভাতৃপ্রতিম জাতি হিসেবেই দেখি।’

‘কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের সেসব বন্ধুত্বপূর্ণ উদ্যোগ কোনো কাজে আসেনি এবং তার প্রধান কারণ— ইউক্রেনের ক্ষমতাবান গোষ্ঠী ছিল পশ্চিমাদের মগজধোলাইয়ের শিকার।’

- বিজ্ঞাপন -

‘সত্যি কথা বলতে, এ যুদ্ধ আসলে তৃতীয় দেশগুলোর নীতির ফলাফল। আরও স্পষ্ট করে বললে, ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্রদের নীতিই এ যুদ্ধের জন্য দায়ী।’

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্যতম অঙ্গরাজ্য ইউক্রেন। তারপর থেকেই জাতিগত সংঘাত শুরু হয় দেশটিতে।

এই সংঘাতের মূল কারণ, ইউক্রেনের মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ সরাসরি রুশ বংশোদ্ভূত এবং রুশভাষী। সোভিয়েত আমলে রুশ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ইউক্রেনীয় জনগোষ্ঠীর মোটামুটি সদ্ভাব বজায় থাকলেও ইউক্রেন স্বাধীন হওয়ার পর দ্বন্দ্ব শুরু হয় এ দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে।

ইউক্রেনের রুশভাষী লোকজন বরাবরই নিজেদেরকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে বিবেচনা করে। অন্যদিকে ইউক্রেনীয়রা সবসময় নিজেদের স্বাধীন ও স্বতন্ত্র জাতি মনে করতে অভ্যস্ত। মূলত এটিই দুই জনগোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের মূল কারণ এবং এই দ্বন্দ্বের জেরে সৃষ্ট সংঘাতে ১৯৯১ সালের পর গত ৩০ বছরে ইউক্রেনে নিহত হয়েছেন ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ।

২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয় রাশিয়া। দেশটির রুশভাষী জনগোষ্ঠী এক্ষেত্রে রাশিয়ার সেনাবাহিনী ও সরকারকে সরাসরি সহায়তা করেছিল।

- বিজ্ঞাপন -

এদিকে, রুশভাষীদের মোকাবিলা করতে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই রাশিয়ার প্রধান বৈরীপক্ষ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের রাজনৈতিক বলয়ে ঢুকতে দেন-দরবার শুরু করেছিল ইউক্রেন। রাশিয়ার কাছে ক্রিমিয়া হারানোর পর এই তৎপরতা আরও বৃদ্ধি পায়। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করে ইউক্রেন।

ইউক্রেনের এই আবেদনে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হয়ে মস্কো। ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহার করে নিতে কিয়েভকে আহ্বানও জানানো হয়, কিন্তু কিয়েভ তাতে কর্ণপাত করেনি।

প্রায় চার বছর এই ইস্যুতে ‍দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলার পর অবশেষে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনীকে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন ভ্লাদিমির পুতিন।

- বিজ্ঞাপন -

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!