আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম সামান্য বেড়েছে মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর)। ডলারের মূল্য স্থিতিশীল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ডিপার্টমেন্ট কৌশলগত পেট্রোলিয়াম রিজার্ভে (এসপিআর) মজুদ বাড়ানোর পরিকল্পনা ঘোষণার পর দাম বাড়লো। তবে শীর্ষ তেল আমদানিকারক চীনে করোনা সংক্রমণের অনিশ্চয়তায় খুব একটা লাভ করতে পারেনি কোম্পানিগুলো।
বাংলাদেশ সময় দুপুর ১ টা ১০ মিনিটে ব্রেন্ট ক্রুড প্রতি ব্যারেল শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বা ১৫ সেন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯ দশমিক ৯৫ ডলার। এর আগের ধাপে বাড়ে ৭৬ সেন্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) অপরিশোধিত তেলের দাম শুন্য দশমিক ৪ ডলার বা ৩২ সেন্ট বেড়েছে ব্যারেলপ্রতি। এখন হয়েছে ব্যারেলপ্রতি ৭৫ দশমিক ৫১ ডলার। এর আগের ধাপে বাড়ে ৯০ সেন্ট। উভয়ের আগের চেয়ে ১ ডলারের বেশি বেড়েছে দাম।
যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থাটি বলছে, এ পরিকল্পনার অংশ হিসাবে একটি পাইলট প্রোগ্রামের অধীনে ৩ মিলিয়ন ব্যারেল পর্যন্ত তেল কিনবে তারা।
এদিকে, বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্রমবর্ধমান চাহিদার সুস্পষ্ট লক্ষণগুলোর ওপর নির্ভর করে দাম বাড়বে।
ফরেন এক্সচেঞ্জ করপোরেশন (ওএএনডিএ) এর বিশ্লেষক এডওয়ার্ড মোয়া একটি নোটে বলেছেন, ‘অপরিশোধিত তেলের দাম কতটা বাড়তে পারে তার জন্য তেলের চাহিদা গুরুত্বপূর্ণ এবং আমরা চীনের বাজার পুনরায় সক্রিয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মিশ্র সংকেত দেখতে পাচ্ছি।’
সিএমসি মার্কেটের বিশ্লেষক তিনা তেং বলেন, চীন যখন মহামারি সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করছে, তখন সংক্রমণ বাড়ছে। ফলে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তেলের বাজারে প্রভাব ফেলছে।
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের পর ২০২২ সালে তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে। গত মার্চ মাসে সর্বোচ্চ দামের কাছাকাছি পৌঁছায়। এর আগে ২০০৮ সালে জ্বালানি তেলের ব্যারেলপ্রতি দাম ১৪৭ ডলারে উঠেছিল আন্তর্জাতিক বাজারে।
রাশিয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পর ধীরে ধীরে তেলের উৎপাদন বাড়াতে শুরু করে এবং এশিয়ার ক্রেতারা তেল কেনা বাড়িয়েছে দেশটি থেকে। যার ফলে মস্কো ২০২৫ সালের শেষ পর্যন্ত মুনাফা করবে, বলছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে, বেধে দেওয়া দরে এবার তেল কিনছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলো। ইইউ দেশগুলোর সরকার রাশিয়ার সমুদ্রজাত জ্বালানি তেল কেনার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায় সম্প্রতি। ব্যারেলপ্রতি এই তেলের দাম ৬০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়। যদিও তাদের যুক্তি আন্তর্জাতিক বাজারে দামের সমন্বয় বজায় রাখতে এমন উদ্যোগ। তবে অনেকে বলছেন, এর উদ্দেশ্য হচ্ছে রাশিয়ার তেল বিক্রি থেকে আয় হ্রাস করা।
সূত্র: রয়টার্স