এক
মুখ মুছে নিলাম শিশিরের ঘামে
আলো-মেঘ হাসে,ভাসে সুখ
শীতল বাতাস বয়ে যায় যে নামে
তাকে চিনি কতটুকু ধানের অসুখ
পথের সলতে পাকাতে পাকাতে হাঁটি
ঘাসফুল হাঁকে, ডাকে ‘ ওই ‘
জননী-স্নেহ মায়ার পরশ এখানে খাঁটি
নকল তো শুধু ভালবাসা,সই
দুখি-রজনী পার হয়ে আসে শিশু-ভোর
শ্যামল বার্তায় ভরে ঘর, ঘরে ধ্বনি
কজন কাহাদের চিনি আর জানি
গাঁয়ে গাঁয়ে রটে, ভাল নেই কেউ, ঘরদোর
দুই
আগাছা শিশিরের মুখ ধুয়ে ফিরে আসি
পড়ন্ত বিকেলের স্বাদ চেটে নিই ঠোঁটে
অশান্ত পাখির ক্লান্ত বাসাগুলো হাঁটে
এ বছর তাকে দিতে হবে ওম, সুখ-হাসি
বাছুরের মাঠ,শস্যক্ষেত্র,জোনাকির আলো
নালি বাতাসের ঢেউ মেঠো ঘাস নুড়ি
মায়ের চোখের আগুনে সেদ্ধ তন্দুরি
হাভাতে তেষ্টা পরশ ছুঁইয়ে বলে, নেই ভালো
ভাল নেই কেউ আমি,তুমি,সব মৃত্যুর সংবাদ
ডালে ডালে ঝুলছে ঝুমকোলতার ফুল
অলির রঙিন ডানারা হাসিতেই মশগুল
সময় আছে লেগে যাও কাজে, ব্যস্ত আবাদ
তিন
চারিদিকে ডাক, ফিরে এসো সোনা, মাটি
জন্ম এখানে প্রতিদিন সকাল সন্ধে হাঁটে
ভাদ্র গেছে সুখের নিশান তুলে,ধানের আঁটি
পথ ভেঙে এগিয়ে চলেছে ফড়িঙের মাঠে
এখন শুধু কথা বলা নয় কারো কাছে
কাজ করেটরে শব্দের দেওয়ালগুলো গাঁথা
মানুষ এখনও চিরদাস থেকে গেছে
মুক্তিও নেই জানা, খোঁজা যাক সেই কথা
এ মুখে মানায় নাকো প্রিয়জনবাণী, প্রিয়
অপ্রিয় সত্য বলে ফেলো যদি কারো কাছে
মিথ্যে প্রলাপ দিয়ে বেঁধে ফেলে কেউ পাছে
সতর্কবাণী আউরিয়ে যাও চরম সত্যেও
চার
ফুল হাসে, পাখি ডাকে, চাঁদ ওঠে গাছে
পেঁচা-চোখ নিয়ে আঁধার বেড়াক যত
নিঃশ্বাসের ঘাসে ফুল ঝরে অবিরত
সন্ধ্যার দীপ জ্বেলে মঙ্গলদীপ যদি বাঁচে
ভোরের কুয়াশা-চাদর বিছিয়ে মাঠঘাটে
স্নেহভরা ভালবাসা, চিন্ময়ী মায়া
ছড়িয়ে ছিটিয়ে নবীন আলোকছায়া
গাছে গাছে ফোটে রঙিন দুফর্মা মলাটে
ভিতরে ভিতরে তালশ্বাস ঝরে, ঝড় হাঁকে
কে কোথায় আছো? শীতের কামড়ে মরি
‘ কম্বলদান, বস্ত্রবিতরণ ‘ খুউব দরকারি
কথা ঘোষিত হয় অনতিদূরে ক্লান্ত মাইকে
পাঁচ
মুহূর্তে নীল হয়ে যায় আকাশ শরীর
সফেদ হুংকার শোনে নীরব বাতাস
প্রতিশ্রুতি তুবড়ি ফোটায় প্রত্নজিজ্ঞাস্
প্রাচীন শিলালিপি ভেদ করে জাগে জিঞ্জির
যে গাছ মৃত্যুভয় ডানা মেলে শুধুই ওড়ায়
সেখানে শান্তি ধর্ম,যজ্ঞ-ধ্যান ভুরি ভুরি
দস্যুদল ভ্রান্ত ধারণা নিয়ে তাঁবু ঘিরি
বাঁধে সত্য মিথ্যের দড়িতে,সত্যকে বাঁধা যায়?
বাস্তব আর কল্পনার মাঝে নীলজল সাঁকো
সত্য-মিথ্যার সুতোয় বাঁধা ধর্মের কল বাজে
মৃত্যু ও দেহাবশেষের সমাধিতে খুঁজে দেখো
পরমজন্ম স্থির ঝুঁকে রয়েছে অনন্তর সাঁঝে
ছয়
গ্রামীণ দুচার কথা,দুখি জনতা কেউ ভাল নেই
নির্মম সময়ের আখ্যানে প্রতিটি চরিত্র আঁকা
মটরশুঁটির শুঁড় শিয়রে স্নেহের পরাগ মাখা
এ বাতাস গ্রাম-শহর জুড়েই থাকে রাধাকৃষ্ণেই
ফাঁকাসে রাতে উঠোনের ধারে আলকাপ সুরে
মাতায় বাতাস টগমগ আমজনতার মন
সুর ও ধ্বনি বিঁধে বুকে পাঁজরে,নিকট বা দূরে
আঁধার কত কি জানে,ঘটে কখন যে অঘটন
গ্রামীণ সংবাদ বিক্রি করে এক ফেরিওল
ঝুড়ি ভর্তি ভালমন্দ, ভালবাসার আসবাব
ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সুখদুঃখ,শোক-জ্বালা
দুহাতে কিনে নেবো আকাশরঙের অ-ভাব
লেখাগুলো পড়ে মতামত জানান দরকার। আত্ম বিশ্লেষণ মূলক কবিতা হৃদয়গ্রাহী হয়।