বাংলাদেশ জাতীয়তাবদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে পুলিশ আটক করেছে বলে দাবি করেছে দলটি।
শুক্রবার ভোরে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি দল গভীর রাতে ফখরুলের উত্তরার বাসায় গিয়ে ভোররাত ৩টার দিকে তাকে তুলে নিয়ে যায়।
তিনি জানান, একই সময়ে ডিবি পুলিশের আরেকটি দল আব্বাসের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ঢাকার শাহজাহানপুরের বাসা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায়।
তাদের আটক বা গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা যায়নি।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ছয় ঘণ্টা বৈঠক করে, যেখানে শনিবার (১০ ডিসেম্বর) কমলাপুর স্টেডিয়াম বা মিরপুর বাংলা কলেজ মাঠে সমাবেশ করার বিষয়ে কথা হয়।
পরে বিএনপির কয়েকজন নেতাকে নিয়ে আব্বাস দুটি অনুষ্ঠানস্থল পরিদর্শন করেন। ওই বৈঠকে নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয় খুলে দেওয়ার আশ্বাস দেন পুলিশ কর্তৃপক্ষ।
বুধবার ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের আগে দলের নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা নিহত ও প্রায় ৫০ জন আহত হন।
সংঘর্ষের পর পুলিশ বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে দলটির প্রায় তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করে।
ডিএমপি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠকের পর সমাবেশের বিষয়ে সরকার ও বিএনপির মধ্যে দৃশ্যত একটি সমঝোতা হয়েছিল।
তবে, দলটির দুই শীর্ষ নেতাকে তুলে নেওয়ার ফলে বিএনপির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান প্রকাশ পেয়েছে।
সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামে যেকোনো নৈরাজ্য হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
বিএনপির কয়েকজন নেতা আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, শনিবারের পরিকল্পিত সমাবেশ ঠেকাতে সরকার দলের আরও সিনিয়র নেতাদের গ্রেপ্তার করতে পারে। বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি আদালত বুধবারের সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলায় বিএনপির ৪৪৫ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে।
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর শাখার আহ্বায়ক আবদুস সালাম ও প্রকাশনা সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ শীর্ষ নেতাদের পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।