ক্ষমতা গ্রহণের পর আফগানিস্তানে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে এক ব্যক্তির শিরশ্ছেদে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে তালেবান সরকার।
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফগানিস্তানে হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত এক ব্যক্তির শিরশ্ছেদ করা হয় বলে জানিয়েছেন তালেবানের মুখপাত্র। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
তালেবান মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, “পশ্চিমাঞ্চলীয় ফারাহ প্রদেশে এই শিরশ্ছেদ কার্যকর হয়। ২০১৭ সালে এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাতে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে এই সাজা দেওয়া হয়েছে। শিরশ্ছেদের সময় তালেবানের জ্যেষ্ঠ্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।”
মুজাহিদ দাবি করেন, মামলাটি তিনটি আদালত তদন্ত করে। এই শিরশ্ছেদের অনুমোদন দিয়েছেন তাদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা। তবে কোন প্রক্রিয়ায় ওই ব্যক্তির শিরশ্ছেদ করা হয়েছে তা সম্পর্কে কিছু বলেননি তিনি।
তিনি বলেছেন, দণ্ড কার্যকরের সময় বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ্য তালেবান কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে ছিলেন ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানি, ভারপ্রাপ্ত উপ-প্রধানমন্ত্রী আবদুল গনি বারাদার, তালেবানের প্রধান বিচারপতি, ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ভারপ্রাপ্ত শিক্ষামন্ত্রী।
দেশটির সুপ্রিম কোর্ট গত কয়েক সপ্তাহে বিভিন্ন প্রদেশে ডাকাতি ও “পরকীয়ায়” অভিযুক্ত নারী-পুরুষকে প্রকাশ্যে বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেওয়ার পর এই শিরশ্ছেদের ঘটনার কথা জানালো তালেবান। ধারণা করা হচ্ছে, এসবের মধ্য দিয়ে ১৯৯০ দশকে কট্টরপন্থী চর্চা ফিরে আসতে পারে আফগানিস্তানে।
গত মাসে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের এক মুখপাত্র প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত বন্ধ করতে তালেবান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
নভেম্বরে তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা দেশটির বিচারকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। আদালতের একটি বিবৃতি অনুসারে, ওই সময় তিনি বিচারকদের শরিয়া আইন অনুসারে শাস্তি প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন।
নব্বই দশকে আফগানিস্তানে তালেবানের প্রথম দফার শাসনামলে প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত ও পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মতো ঘটনা ঘটেছিল।