ফিফা বিশ্বকাপের ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায় রচনা করল মরক্কো। স্পেনকে টাইব্রেকারের রোমাঞ্চে ৩-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের শেষ আট নিশ্চিত করেছে আফ্রিকান দলটি।
টসে জিতে টাইব্রেকারের প্রথম শটেই জালের ঠিকানা খুঁজে নেন আবদেলহামিদ সাবেরি। তবে প্রথম শট মিস করার মাধ্যমে ব্যর্থতার ধারা বজায় রাখেন পাবলো সারাবিয়া ও স্পেন। দ্বিতীয় শটেও গোল আদায় করে নেয় মরক্কো। তবে দ্বিতীয় শটেও স্প্যানিশদের ঠেকিয়ে দেন ম্যাচে মরক্কোর নায়ক ইয়াসিন বুনো।
মরোক্কানদের পরের শটটি স্প্যানিশ গোলকিপার উনাই সিমন ঠেকিয়ে দিয়ে ম্যাচে রাখার সম্ভাবনা জাগিয়ে রাখলেও শেষ পর্যন্ত আর সেটি হয়নি।
শেষ কবে বিশ্বকাপের কোন দল এমন ডিফেন্স দেখিয়েছে সেটি মনে করা দুষ্কর। রক্ষণভাগে দুর্ভেদ্য দেয়াল গড়ে তুলে রাউন্ড অফ সিক্সটিনে স্পেনের বিপক্ষে ম্যাচে মরক্কো নতুন করে চেনাল যেন নিজেদের। ম্যাচের ৯০ মিনিট তো বটেই, মরক্কো নিজেদের জাল সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হয়েছে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও।
আর তাতেই শেষ আট নিশ্চিতের মিশনে দুই দলের ভাগ্য নির্ধারণী লড়াইটা গড়িয়েছে টাইব্রেকারে।
চলতি বিশ্বকাপে দ্বিতীয়বারের মত কোন ম্যাচ গড়াল টাইব্রেকারে। একদিন আগেই জাপান ও ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচ গড়িয়েছিল পেনাল্টি শুট আউটে।
সমান লড়াইয়ে শামিল স্পেন-মরক্কো। প্রত্যাশা ও প্রস্তুতি থাকলেও ম্যাচের প্রথমার্ধে মরক্কোর রক্ষণভাগ ভেদ করতে ব্যর্থ হয়েছে স্পেন। অল্প-বিস্তর আক্রমণ হলেও জালের স্পর্শ পায়নি বল। বিরতির আগ পর্যন্ত গোলের দেখা পায়নি দুই দল।
আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসলেও মরক্কোর অভেদ্য রক্ষণভাগের সুবাদে প্রথমার্ধে সফলতার মুখ দেখেনি স্প্যানিশরা। ম্যাচের আগে মরক্কোর ডিফেন্স ও তাদের গোলকিপার বুনো যে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে সেটি অনেকটা অনুমেয়ই ছিল। ম্যাচের শুরু থেকে আফ্রিকানদের চেপে ধরলেও সুবিধা করতে পারছিলেন না স্প্যানিশরা।
পুরো ৪৫ মিনিটে কেবল একবারের জন্য মরক্কোর জাল লক্ষ্য করে শট করতে সক্ষম হয় স্প্যানিশরা। সেটিও হয়েছিল লক্ষ্যভ্রষ্ট।
ফিনিশারের অভাবে তিনবারে সুযোগ পেয়েও লিড নেয়া হয়নি মরক্কোর।
তবে ম্যাচের সিংহভাগ সময় বল নিজেদের পায়ে রেখে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কোর্টে নিয়ে আসার চেষ্টা চালিয়ে যার স্পেন। কিন্তু আফ্রিকার দেশটির দেয়াল হয়ে দাঁড়ানো রক্ষণভাগে সামান্য চিড় ধরাতে পারেনি তারা।
আর তাতেই গোলশূন্য থেকে বিরতিতে যেতে হয় দুই দলকে।
বিরতির পর আক্রমণের ধার বাড়ায় স্পেন। ফুটবল দেবতার সুদৃষ্টি নিজেদের ওপর আনা সম্ভব হয়নি ২০১০ বিশ্বকাপজয়ীদের। আর তাতে করে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।