ইরানের নারী ও বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্যাতন-সহিংসতার অভিযোগের জেরে “নৈতিকতা পুলিশের” কার্যক্রম স্থগিত করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
দেশটিতে দুই মাসের বিক্ষোভ চলার পর এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইরানের প্রসিকিউটর জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মনতাজরি এই ঘোষণা দেন।
রবিবার (৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
গত সেপ্টেম্বরে ২২ বছরের কুর্দি নারী মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ এক পর্যায়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়।
ওই বিক্ষোভ থেকে “নৈতিকতা পুলিশের” কার্যক্রম বাতিল এবং বাধ্যতামূলক হিজাবের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলে আন্দোলনকারীরা।
গত সেপ্টেম্বর থেকে চলা আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ২০০ জন নিহত হয়েছেন বলে দেশটির সরকার স্বীকার করেছে। তবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বলেছে, হিজাববিরোধী আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সহিংসতায় ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
এর মধ্যেই কাতারে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফুটবলে নিজেদের ম্যাচের আগে নিজ দেশের জাতীয় সংগীত গাইতে অস্বীকৃতি জানান ইরানি ফুটবলাররা। বিক্ষোভকারীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে নেওয়া তাদের ওই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর কাড়ে।
প্রসিকিউটর জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মনতাজরি বলেন, “বিচার বিভাগের সঙ্গে নৈতিকতা পুলিশের কোনও সম্পর্ক নেই। এটি অতীতে যে জায়গা থেকে চালু করা হয়েছিল সেই জায়গা থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
শনিবার “সাম্প্রতিক দাঙ্গার সময় হাইব্রিড যুদ্ধের রূপরেখা” শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে কথা বলেন ইরানের প্রসিকিউটর জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মনতাজরি। এ সময় ইরানে নৈতিকতা পুলিশ কার্যক্রম শেষ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
২০০৬ সালে নৈতিকতা পুলিশের কার্যক্রম শুরু হয়। তবে ইরানের বাধ্যতামূলক পোষাক কোডটি বাতিল করা হবে এমন আইনের কোনো ইঙ্গিত দেয়নি দেশটির সরকার।
প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি শনিবার টেলিভিশনে দেওয়া মন্তব্যে বলেন, “সাংবিধানিকভাবে ইরানের প্রজাতন্ত্র ও ইসলামিক ভিত্তিতে করা হয়েছে। তবে সংবিধান বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে এটি পরিবর্তনের বা সংস্কারের সুযোগ রয়েছে।”
১৯৭৯ সালে মার্কিন-সমর্থিত রাজতন্ত্রকে উৎখাত করে ইরানের ইসলামী প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চার বছর পর দেশটিতে হিজাব বাধ্যতামূলক করা হয়।