মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে (ডিআর কঙ্গো) ৫০ জন বেসামরিক ব্যক্তিকে হত্যা করেছে একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। চলতি সপ্তাহে আফ্রিকার এই দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় কিশিশে শহরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) দেশটির এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও তাদের সহযোগীদের অভিযুক্ত করেছে কঙ্গোর সশস্ত্র বাহিনী। তবে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কঙ্গোর সেনাবাহিনী এবং জাতিগত টুটসি গোষ্ঠীর নেতৃত্বাধীন মিলিশিয়া বাহিনী এম২৩ মধ্য আফ্রিকার এই দেশটির পূর্বাঞ্চলে কয়েক মাস ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে ওই এলাকাটি বেশ অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে এবং সেখানে হওয়া বিভিন্ন হামলার জন্য উভয় পক্ষই একে অপরকে অভিযুক্ত করেছে।
এম২৩ মুভমেন্ট গ্রুপের রাজনৈতিক মুখপাত্র লরেন্স কানিউকা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘কিশিশেতে বেসামরিক মানুষের ওপর হামলা নিয়ে এম২৩ আন্দোলনের বিষয়ে যে ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করছি আমরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘এম২৩ আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় সম্প্রদায়কে এটিই মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, আমরা কখনোই বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করিনি।’
জাতিসংঘ এবং মার্কিন এক কূটনীতিকও বলেছেন, তাদের কাছে মঙ্গলবার উত্তর কিভু প্রদেশের কিশিশে শহরে বেসামরিক হত্যাকাণ্ডের তথ্য রয়েছে, তবে বিস্তারিত কিছু জানাননি তারা। তারা দু’জনেই এ বিষয়ে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
কিনশাসায় মার্কিন দূতাবাসের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স স্টেফানি মাইলি টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় বলেছেন, ‘কিশিশে অঞ্চলে বেসামরিকদের গণহত্যায় আমরা গভীরভাবে দুঃখিত। এটি যুদ্ধাপরাধ হতে পারে।’
জাতিসংঘের মহাসচিবের একজন মুখপাত্র বলেছেন, কিশিশে অঞ্চলে এম২৩ এবং স্থানীয় মিলিশিয়াদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের রিপোর্ট পেয়েছে জাতিসংঘ। যার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে বেসামরিক হতাহতের ঘটনা রয়েছে।
কঙ্গো এবং জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবেশী রুয়ান্ডা এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে সহায়তা করে। অবশ্য রুয়ান্ডা এই অভিযোগ ধারাবাহিকভাবে অস্বীকার করে আসছে। এই পরিস্থিতিতে দুই দেশ সংঘাতের সমাধান খোঁজার লক্ষ্যে গত সপ্তাহে অ্যাঙ্গোলায় আলোচনায় বসেছিল।
গত সেপ্টেম্বরে এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা জানিয়েছিল, এম২৩ বিদ্রোহীরা বছরের পর বছর নিষ্ক্রিয় থাকার পর ২০২১ সালের শেষের দিকে আবারও যুদ্ধ শুরু করে। তখন থেকে তারা উগান্ডা সীমান্তের কৌশলগত শহর বুনাগানাসহ উত্তর কিভুজুড়ে বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে নেয়।
কঙ্গো বারবার মধ্য আফ্রিকান প্রতিবেশী রুয়ান্ডাকে এম২৩ বিদ্রোহীদের সমর্থন করার জন্য অভিযুক্ত করেছে, যদিও কিগালি এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।