মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে প্রায় দুই মাস ধরে চলছে হিজাববিরোধী বিক্ষোভ। এতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। দিনে দিনে আন্দোলনের মাত্রা আরও বাড়ছে। আর এরমধ্যেই জানা গেল হিজাববিহীন এক নারীকে সেবা দিয়ে চাকরি হারিয়েছেন দেশটির এক ব্যাংক কর্মকর্তা।
ইরানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মেহের নিউজ রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, রাজধানী তেহরানের কাছে অবস্থিত কোম প্রদেশের এক ব্যাংক কর্মকর্তা ‘হিজাববিহীন নারীকে সেবা প্রদান করেছেন।’
কোম প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ হাজিজাদেহের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, গভর্নরের নির্দেশে ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
হিজাব ছাড়া ব্যাংকে প্রবেশ করে ওই নারীর সেবা গ্রহণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার ঘটনা ঘটল।
কোম প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ হাজিজাদেহ আরও জানিয়েছেন, ইরানের প্রায় বেশিরভাগ ব্যাংকই রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন। ফলে দেশটিতে বাধ্যতামূলক হিজাব পরিধানের যে আইন রয়েছে সেটি কার্যকরে ব্যাংক কর্মকর্তাদেরও দায়িত্ব আছে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে হিজাব পরিধানের বিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন মাহসা আমিনী নামের এক কুর্দি তরুণী। পুলিশ হেফাজতে মাহসা নিহত হওয়ার পর পুরো ইরানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
ইরানে নারীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। এছাড়া ঢিলেঢালা পোশাক পরিধানেও বাধ্যবাধকতা রয়েছে তাদের। এ কঠোর আইনের পরিবর্তন চান বিক্ষোভকারীরা।
এদিকে ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের মাধ্যমে ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থিত রাজতন্ত্রের পতন হয়। এর চার বছর পর দেশটিতে হিজাব পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়। যদিও পরবর্তীতে এই আইন কার্যকরে তেমন একটা বল প্রয়োগ করা হয়নি। তখন দেশটির নারীদের জিন্স প্যান্ট ও নানান রঙের স্কার্ফ পরতে দেখা যায়। কিন্তু চলতি বছরের জুলাইয়ে রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হিজাব বিধান কার্যকরে দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে একত্রিত ও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেন।
সূত্র: এএফপি