ইউক্রেন ও তার মিত্র রাষ্ট্রগুলো দুর্ভিক্ষ ও খরার ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোতে ১৫ কোটি ডলারের খাদ্যশস্য রপ্তানি করার পরিকল্পনা করছে। শনিবার (২৬ নভেম্বর) কিয়েভে এক সম্মেলনে এ ধরনের বক্তব্য তুলে ধরা হয়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে কিয়েভের উদ্যোগ শুধু ফাঁকা বুলি নয়।
ক্রেমলিন বলছে, ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগরের বন্দর দিয়ে রপ্তানি করা খাদ্যশস্য জাতিসংঘের পরিকল্পনার অধীনে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে পৌঁছাচ্ছে না।
জেলেনস্কি বলেন, ইথিওপিয়া, সুদান, দক্ষিণ সুদান, সোমালিয়া ও ইয়েমেনসহ ২০টির মতো দেশে ১৫ কোটি ডলার মূল্যের খাদ্যশস্য রপ্তানি করা হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে এই অর্থ সংগ্রহ হয়েছে।
সম্মেলনে জেলেনস্কি আরও বলেন, দুর্ভিক্ষ ও খরার ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোতে ইউক্রেনের বন্দর দিয়ে অন্তত ৬০টি খাদ্যশস্যের জাহাজ যাবে। এতে অংশ নেন বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী, পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া ও হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট। এ ছাড়া ভিডিওতে অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন জার্মানি ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এবং ইউরোপীয়ান কমিশনের প্রধান।
শীর্ষ সম্মেলন শেষে জারি করা একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাশিয়া গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলার পর থেকে, বিশ্ব ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় ১০ মিলিয়ন টন কম কৃষিপণ্য পেয়েছে। এর মানে হলো বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা গুরুতরভাবে হুমকির সম্মুখীন। এর পেছনে সংঘাতের আগে ইউক্রেনীয় বন্দরগুলো রাশিয়ার অবরোধ করাকে দায়ী করা হয়।
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা নিশ্চিত ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসী যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের গুরুতর মানবিক ও অর্থনৈতিক পরিণতি আমরা যৌথভাবে কাটিয়ে উঠবো।’
১৯৩২-৩৩ সালে হলডোমার দুর্ভিক্ষে শীতকালে ইউক্রেনে বহু মানুষের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনাকে স্মরণ করার জন্য এবারের আয়োজন।
এক ভিডিও বার্তায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য পরিবহন ও বিতরণ কাজের জন্য বিশ্ব খাদ্যবিষয়ক সংস্থা (ডব্লিউ এফপি)কে ৬ দশমিক ২৪ ডলার অর্থ প্রদান করবে। বিশেষ করে সুদান ও ইয়েমেনে সহায়তা পাঠাতে এ অর্থ খরচ করবে।
তিনি আরও বলেন, বেশি ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো না চাইলে তারা অর্থও প্রদান নাও করতে পারে।
সূত্র: রয়টার্স