বাংলাদেশে আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় এজাহারনামীয় আসামি মেহেদী হাসান অমি ওরফে রাফিকে (২৪) গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আদালত এলাকা থেকে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় আসামি মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে সিটিটিসি। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিটিটিসির এক কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া মেহেদী হাসান জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার সদস্য। আদালত চত্বর থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার মিশনে সরাসরি যুক্ত মেহেদি। এ ঘটনায় হওয়া মামলারও এজাহারভুক্ত আসামি তনি। মেহেদীর বাড়ি সিলেটে।
তিনি ব্লগার নাজিমউদ্দীন সামাদ হত্যার মিশনেও অংশ নিয়েছিলেন বলে সিটিটিসির এই কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
গত ২০ নভেম্বর বেলা ১২টার দিকে দুই জঙ্গিকে একটি মামলায় আদালতে হাজির করা হয়। হাজিরা শেষে পুলিশ সদস্যরা তাদের নিয়ে যাচ্ছিলেন হাজত খানার দিকে। এ সময় পুলিশের চোখে-মুখে স্প্রে করে জঙ্গি সদস্য মইনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে ছিনিয়ে নেয় তাদের সহযোগীরা। এই দুই জঙ্গি দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আদালত প্রাঙ্গণ থেকে জঙ্গি আসামি ছিনতাইয়ের মাস্টারমাইন্ড হলেন নিষিদ্ধ-ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের প্রধান সমন্বয়ক মেজর (চাকরিচ্যুত) সৈয়দ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া। তার অনুমতিতে এই ছিনতাই অপারেশন পরিচালনা করেন সংগঠনের সামরিক শাখার প্রধান মশিউর রহমান ওরফে আইমান।
গ্রেপ্তার থাকা জঙ্গি আরাফাত ও সবুরকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, কনডেম সেলে থাকা ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গি আসামিরা প্রায়ই মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতেন। কারাগারে বসেই পরিকল্পনা করা হয় আসামি ছিনতাইয়ের।
প্রথমে ত্রিশালের জঙ্গি ছিনতাইয়ের মতো প্রিজনভ্যানে হামলার করে সহযোগীদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে কাশিমপুর থেকে পুরান ঢাকায় আদালত পর্যন্ত আনা-নেওয়ার সময় প্রিজনভ্যানে হামলা করাটা অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয় তাদের জন্য।
তাই তুলনামূলক কম নিরাপত্তা থাকায় ছিনতাই অপারেশনের স্পট হিসেবে বেছে নেওয়া হয় আদালত প্রাঙ্গণকে।
জানা গেছে, ঘটনার পর তদন্তের অংশ হিসেবে ২১ নভেম্বর সিটিটিসির একাধিক টিম কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার পরিদর্শনে যায়। প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে কারাগার থেকে কার মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে জঙ্গিরা বাইরে যোগাযোগ করেছিল তা জানার চেষ্টা চলছে।