ইরানে হিজাববিরোধী বিক্ষোভ, নিহত আরও ৭২

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যু ঘিরে শুরু হওয়া বিক্ষোভে দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এতে করে দেশটিতে আরও ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এসব মানুষের মৃত্যু হয়।

এর মধ্যে কেবল কুর্দি-জনবহুল এলাকায় মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের। ইরানবিষয়ক নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যানস রাইটসের (আইএইচআর) বরাত দিয়ে বুধবার (২৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই বিক্ষোভে টালমাটাল ইরান। হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিকতা পুলিশ ২২ বছর বয়সী কুর্দি ইরানি তরুণী মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর পুলিশি হেফাজত থেকে কোমায় নেওয়া হয় এই তরুণীকে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিনই মারা যায় মাহসা আমিনি।

সংবাদমাধ্যম বলছে, মাহসা আমিনিকে তেহরানে নৈতিকতা পুলিশ তার চুল সঠিকভাবে না ঢেকে রাখার অভিযোগে আটক করেছিল। ২২ বছর বয়সী ইরানি কুর্দি এই তরুণী গ্রেপ্তার হওয়ার তিন দিন পর ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ হেফাজতে মারা যায়। তার মৃত্যুর পর থেকেই ইরানজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে।

- বিজ্ঞাপন -

মূলত এরপর থেকেই টানা সরকারবিরোধী বিক্ষোভে বিপর্যস্ত ইরান। ইরানের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, ওই তরুণী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তবে ভুক্তভোগীর পরিবার এই বিষয়ে বিরোধিতা করে বলেছে, তাকে নৈতিকতা পুলিশ মারধর করেছে।

এএফপি বলছে, নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে ২২ বছর বয়সী আমিনির মৃত্যুর পর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে যে বিক্ষোভ শুরু হয় তা ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে ইরানের ক্ষমতাসীনদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে।

জাতি-গোত্র-সম্প্রদায়, সামাজিক শ্রেণী এবং প্রাদেশিক সীমানা পেরিয়ে ইরানের এই প্রতিবাদের ঢেউ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। আর এই বিক্ষোভ দমনে ইরানি কর্তৃপক্ষ কঠোর ক্র্যাকডাউনের পথ বেছে নিয়েছে যা একটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

এমনকি ইরান আন্তঃসীমান্ত ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলাও শুরু করেছে। গত মঙ্গলবার সর্বশেষ এই ধরনের হামলা করে দেশটি। এছাড়া নির্বাসিত কুর্দি বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিবেশী ইরাকে নিজস্ব ঘাঁটি থেকে ইরানে চলমান এই বিক্ষোভকে প্ররোচিত করার অভিযোগও করেছে তেহরান।

নরওয়ে ভিত্তিক মানবাধিকার গ্রুপ ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) ইরানের অভ্যন্তরে সহিংসতার সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে বলেছে, বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে দেশব্যাপী ইরানি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ৪১৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৫১ শিশু এবং ২১ জন নারীও রয়েছেন।

- বিজ্ঞাপন -

সংস্থাটি আরও বলেছে, গত সপ্তাহে ইরানে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আরও ৭২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৫৬ জন ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় কুর্দি-জনবসতিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দা। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইরানের এই অঞ্চলে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ কর্মকাণ্ড বেড়েছে।

এছাড়া মাহাবাদ, জাভানরৌদ এবং পিরানশাহর-সহ কুর্দি-জনবহুল পশ্চিম ইরানের বেশ কয়েকটি শহরে বড় বিক্ষোভ দেখা গেছে। প্রায়শই এসব বিক্ষোভ নিহতদের শেষকৃত্যের সময় শুরু হয়ে থাকে।

নরওয়ে-ভিত্তিক অধিকার গোষ্ঠী হেনগাও ইরানের কুর্দি অঞ্চলগুলোতে নজর রেখে থাকে। সংস্থাটি ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীকে মেশিনগান দিয়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর সরাসরি গুলি চালানো এবং আবাসিক এলাকায় গোলাবর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে।

- বিজ্ঞাপন -

হেনগাও বলেছে, নিরাপত্তা বাহিনীর ক্র্যাকডাউনে নিহতদের শেষকৃত্যের জন্য হাজার হাজার লোক জড়ো হওয়ার পরে শুধুমাত্র জাভানরৌদেই আবারও পাঁচজন নিহত হয়েছেন। গোষ্ঠীটি বলেছে, তারা গত সপ্তাহে ইরানের নয়টি শহরে ৪২ জন কুর্দি নাগরিককে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। নিহত এসব কুর্দিদের প্রায় সবাই সরাসরি গুলিবর্ষণে প্রাণ হারিয়েছেন।

এছাড়া প্রতিবাদ-বিক্ষোভ বেড়ে যাওয়ায় সোমবার ইরানি কর্তৃপক্ষ দেশব্যাপী মোবাইল ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট করেছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!