নিস্তব্ধ সান্তনা
মাছে মাছ খাবে
তুমি কেন খাবে?
আসমানে আছে লক্ষ কোটি তারা
হোক কোন অমাবস্যা
অথবা গলিত জোসনা ধরা।
চোখে মুখে ভান ধরো ক্ষুধা লেগেছে
চুমু খেয়ে ক্ষুধা মিটাবে
শরীরের অসীম শক্তি
ঝেড়ে দিবে ছেড়ে দিবে
পুনর্জন্ম গহ্বরে।
মাছেরা মাছ খাবে
তোমার জন্য আছে বৃক্ষরাজি
ফুল ফল সুন্দরী নারী
যার কাছে আছে টাটকা অমৃত সুধা।
যদি সে বিষকন্যা হয়!
ভয় পেয়ো না
আরো আছে সুন্দরী রমণী
যে ভালবাসে ধরণী
জন্ম দেয় নতুন নতুন মানুষ।
মাছেরা থাকে মিঠা জলে লোনা জলে
হিমাঙ্কের নিচে বরফের তলে
তোমার আর আমার ছাড়া
ঋষির আছে কৈলাস পর্বতমালা
মানস সরোবর নদ,নদীর মাতৃস্নেহ।
কল কল জল ছলছল
সবুজ সবুজ ছায়ায়
থাকে কালো মৃত্তিকা
মাছেরা ভাসে অবিরত
কবে যাবে আমার সাথে তুমি
বলতো?
সেই বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে।
কবি হেলাল হাফিজ
কষ্ট জলে বাঁধ ভাঙ্গা হৃদয়ে
বেদনার কবি হেলাল হাফিজ।
যুদ্ধে যেতে বলে দেওয়ার কবি,
মিছিলে যেতে বলে দেওয়ার কবি,
ভয়ংকর পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে –
জীবন আর মানুষের পক্ষের কবি।
উত্তপ্ত ঢেউয়ের জলে
আগুনের ফুলকি ভাসে
লকলকে আগুনের মৃত্তিকা দেখে
কোথায় উড়ে যায় জল কবুতর।
নেত্রকোনা’র মগরা নদীতে
এখনো খানিকটা জল করে কল কল
বিষন্ন ভালবাসায় কবি বলে
জন্মভূমি নেত্রকোনা তাঁর বোন,
শীতল মাটিরাঙ্গা ছোট বোন।
নদীর পাড়ের হেলেন
কবিতা সেন
শংকরা রাণী
হায়রে ভালোবাসা
মানুষ জমায় টাকা
এ কবি
জমায় মানুষ।
প্রেসক্লাবের এপার ওপার তাঁর রাজত্ব
কবিতার বর্ণমালা ঢাকা শহর
আসলে পাবে কবির কাছে
অদৃশ্য ছায়া ডিজিটাল মোহর।
লুলু মারজান
শরৎ চলে গেল
হেমন্তী বিবর্ণ ঘাসফুল।
জাহাজসহ হারিয়ে যাওয়া নাবিকের
স্ত্রী মারজান লুলু এখন আর কাঁদে না
শুধু সমুদ্রের বেলাভূমিতে অচেনা অজানা
ঘাসফুল লতা গুলোর ফুল দেখে সকাল বিকাল
সূর্য উদয়ের সময় হৃদপিন্ডের ঠিক মাঝখানে
অজানা অচেনা তীরন্দাজের তীর গেঁথে যায়।
তবুও, জীবন জীবিত।
উড়াল দেয়নি
ভয়ংকর মাছ খেকো সারস পাখির মতোন।
এবেলা অবেলা করতে করতে সময় যায়
ঢেউয়ে ভেসে পাড়ে উঠে আসা
জীবন্ত মাছের ঝলসানোদেহে উদর পূর্তি হয়।
কোথায় যেন একটি করুন বেহালার সুর
উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে বেড়ায় কানের কাছাকাছি
তবে কি সেই নাবিক বেঁচে আছে কোনক্রমে।
কোথায় খুঁজবো থাকে ঝাউবনে রয়েছে
চিত্রা হরিণের দল কেশর বিহীন সিংহী
সুযোগ খুঁজে নির্মম হিংস্রতায় হরিণের গোশত।
গোলপাতা গোল নয় সোনালী নারকেলের পাতা
নুনা মিষ্টি রসে নুয়ে পরে কামুক রমণীর মতো।
আর কতদিন যাবে এভাবে হেমন্তে
সাদা দুই টুকরো কাপড়ে বাসন্তী ফুল
বিশাল মহুয়া বৃক্ষের ছায়াতলে।
পাহাড়ি ঝর্ণার শীতল জলে
শরীর ভিজায়
লুলু মারজান
আর কতকাল অপেক্ষা?
একা
তারপরও একা থাকতে চাই
নিজের মতো করে
কেউ আমাকে দুঃখ দেবার কষ্ট দেয়া চাইনা
হারিয়ে যাবো লুকিয়ে যাব যখন মরে যাব
কেউ আসবে না
কিভাবে আত্মা বিহীন দেহটি থাকবে
তখন আমি তো জানব না কিছুই।
মরার আগে মনে রাখতে চেষ্টা করব
কারো কারো ভালোবাসা
কারো কারো জড়িয়ে ধরা
কারো কারো যৌবনের সুখ প্রশান্তি
সময় মুচকি হেসে অথবা জোরে হেসে আনন্দ দেওয়া।
ঘন রাত্রি মলিন হবে সূর্য ওঠার আগে।
তখন আমি থাকবো না।
ইলিশ মাছ
তীক্ষ্ণ ছুটে চলা সেলফিশের ভয়ে
নাকি যৌন উন্মোধনায় পদ্মা মেঘনা যমুনা
মোহনা আগুনমুখা যৌনতা মাখা
ইলিশ মাছের ঝাঁক
পুরুষ আর মেয়ে ইলিশেরা
নিষিক্ত হয় তাদের বীর্যে ডিম্ব।
তখন কি হয় ইলশে গুড়ি বৃষ্টি
মেঘবালিকাদের অনাসৃষ্টি
মোহনায় নারী ইলিশ মাছ
স্বাদে গন্ধে বাঙালির মনে প্রাণে
ভয়ংকর লালসার শিকার হয়
মায়াজালে ধরা পড়ে যখন
মৃত্যু কিছুক্ষণের মধ্যেই অবধারিত
নিরীহ মাছ মানুষের খাদ্য।
আর যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই
এ পৃথিবীর
দরিদ্র নিপীড়িত
যুদ্ধ আক্রান্ত
এলাকার শিশুরা কেমন আছে?
গর্ভবতী নারীরা কেমন আছে?
মানুষগুলোর এত কষ্ট এত কষ্ট এত কষ্ট।
ইউক্রেনের আতঙ্কগ্রস্থ মানুষেরা
আতঙ্কগ্রস্ত পাখিরা মিজাইলের
আঁচড়ে মিশে যাওয়া ফুল গাছগুলো
অক্সিজেনদাতা বৃক্ষগুলো –
সব পুড়ে ছারখার
আর কত আগ্রাসন
আর কত সাম্রাজ্যবাদী চিন্তা
যুদ্ধ থামাও শান্তি চাই।