চুরির মামলায় ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ারের বিচার বিভাগীয় বিচারক প্রতিমন্ত্রী নিশীথের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এ ঘটনায় রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে শুরু হয়েছে তুমুল সোরগোল।
এর আগে, ২০০৯ সালে আলিপুরদুয়ার শহরের একটি স্বর্ণের দোকানে চুরির অভিযোগ তুলে নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে পুলিশ। তখন নিশীথ প্রামাণিক বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, ছিলেন তৃণমূল কর্মী। ২০১৯ সালে নিশীথ প্রামাণিক তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে আলিপুরদুয়ার সংসদীয় আসনে বিজেপির টিকিটে জিতে সংসদ সদস্য হন। তারপর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হন।
মঙ্গলবার এই মামলা আলিপুরদুয়ারের বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উঠলে বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট নিশীথ অধিকারীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলার পররবর্তী তারিখ ৭ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
এদিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার খবরে উত্তাল হয়ে পড়েছে কোচবিহার ও দিনহাটা অঞ্চল।
এ ঘটনার পর নিশীথ প্রামাণিক কোনো মন্তব্য না করলেও বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেছেন, “রাজ্য পুলিশ কতটা নির্লজ্জ হলে ২০০৯ সালের মামলায় ২০২২ সালে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে! এ থেকেই স্পস্ট হয়, শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই এ ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে।”
তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলার সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, “এটা আমাদের জন্য কত দুর্ভাগ্য যে একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে মামলা হয়। এসব ঘটনার পর বিজেপির আর বড় করে মুখ খোলার পথ থাকবে না।”
কোচবিহারে নিশীথ প্রামাণিকের প্রতিপক্ষ তৃণমূলের উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, “আমরা তো প্রথম থেকেই বলেছিলাম, নিশীথ প্রামাণিকের মতো একজন ‘সমাজবিরোধী’–কে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর আসনে বসানো আমাদের দুর্ভাগ্য ছাড়া আর কিছু নয়। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আমাদের অভিযোগকে মান্যতা দিলেন আদালত।”
এ ঘটনার পর বিজেপির আলিপুরদুয়ারের সংসদ সদস্য জন বার্লা বলেন, “এসব করে পার পাবে না তৃণমূল। রাজ্য সরকার তো এখন উন্নয়নের কাজ না করে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে রাজনীতি শুরু করেছে।”