ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্র পোল্যান্ডে বিস্ফোরণে ঘটনার প্রেক্ষিতে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-৭ জোট নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক বসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
পোল্যান্ডে বিস্ফোরেণের ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপজুড়ে। বুধবার (১৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
মঙ্গলবার ইউক্রেন সীমান্তবর্তী পোল্যান্ডের একটি গ্রামে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানলে দুই জন নিহত হন।
এ পরিস্থিতিতে বালিতে জি-সেভেন নেতাদের সঙ্গে অনির্ধারিত জরুরি বৈঠকে বসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বৈঠকে উপস্থিত হন, জার্মান চ্যান্সেলর ওলফ শলৎজ, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন এবং ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল।
স্থানীয় সময় বুধবার সকালে সংক্ষিপ্ত বৈঠকে বসেন তারা। জি-২০ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাইডেন এবং বিশ্বের অন্যান্য নেতারা ইন্দোনেশিয়ার বালিতে অবস্থান করছেন।
হামলার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদার এবং ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গের সঙ্গে আলাপ করেছেন জো বাইডেন।
তবে পোল্যান্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এ মূহুর্তে ক্ষেপণাস্ত্র পড়ার বিষয়টিকে “পোল্যান্ডের ওপর রাশিয়ার হামলা” হিসেবে বিবেচনা করছে না। ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে পোল্যান্ডের পিওদো গ্রামে। এটি ইউক্রেন সীমান্তের সঙ্গে লাগোয়া একটি গ্রাম।
পোলিশ সরকারের একজন মুখপাত্র জানান, হামলাটি রাশিয়ার কিনা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে বিস্ফোরণে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে পোল্যান্ড তার সামরিক ইউনিটের প্রস্তুতি বাড়াচ্ছে। আমাদের ন্যাটো আর্টিকেল ফোর সক্রিয় করতে হবে কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে।
পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা সাংবাদিকদের বলেন, “ক্ষেপণাস্ত্র কে বা কারা ছুড়েছে এখনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ মুহূর্তে আমাদের কাছে কোনো চূড়ান্ত প্রমাণ নেই… এটি সম্ভবত রাশিয়ার তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র ছিল, এর তদন্ত চলছে।”
ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবরে নড়েচড়ে বসেছে সামরিক জোট ন্যাটো। জোটের এক কর্মকর্তা সিএনএনকে জানান, এ ঘটনায় খতিয়ে দেখতেপোল্যান্ডের সঙ্গে গভীরভাবে সমন্বয় করছে ন্যাটো।
পোল্যান্ডে রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে দাবি করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রাতের নিয়মিত ভাষণে তিনি বলেন, “সন্ত্রাসীরা শুধু আমাদের সীমান্তেই সীমাবদ্ধ না।”
তাৎক্ষণিক বিবৃতিতে প্রত্যাখ্যান করে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ইউক্রেন-পোলিশ সীমান্তের কাছে কোনো লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়নি।
হামলার খবরে নিজ দেশের জাতীয় প্রতিরক্ষা পরিষদের বৈঠক ডেকেছেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান। হাঙ্গেরি ইউক্রেনের প্রতিবেশি দেশ।
ন্যাটোর আর্টিকেল ৪ অনুযায়ী কোনো মিত্রের ওপর হামলা পুরো জোটের ওপর হামলা বলে বিবেচিত হবে। আর সেকারণে রাশিয়া যদি ন্যাটো সদস্য পোল্যান্ডে হামলা চালায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ৩০ জাতির পুরো জোটের সঙ্গে সরাসরি লড়াই শুরু হয়ে যেতে পারে।