আফগানিস্তানে শরিয়া আইন মোতাবেক নির্দিষ্ট কিছু অপরাধের জন্য জনসমক্ষে অঙ্গচ্ছেদ ও পাথর ছুড়ে মারার শাস্তির নির্দেশ দিয়েছেন ক্ষমতাসীন তালেবানের তৃতীয় সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা দেশটির বিচারকদের এ নির্দেশ দিয়েছেন।
আখুন্দজাদার মুখপাত্র বলেছেন, ডাকাতি, অপহরণ ও রাষ্ট্রদ্রোহের মতো অপরাধের শাস্তি অবশ্যই ইসলামি শরিয়া আইনে অনুসরণ করা উচিত। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি সোমবার (১৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
১৯৯০-এর দশকে তালেবান গোষ্ঠী যখন আফগানিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল, তখন এ ধরনের শাস্তির বিধান ছিল। সে সময় প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের বিধানও ছিল। এসব শাস্তির জন্য বিশ্বব্যাপী নিন্দিত ছিল আফগানিস্তান।
গত বছর পুনরায় ক্ষমতায় বসার পর তালেবান শাসকেরা বলেছিলেন, তারা আগের মতো কঠোর হবেন না। কিন্তু তারা প্রতিশ্রুতি রাখেননি। তালেবানেরা ক্ষমতায় যাওয়ার পর থেকেই নানা ধরনের দমন-পীড়ন শুরু হয়েছে। বিশেষ করে নারীর অধিকার কঠোরভাবে সীমিত করা হয়েছে দেশটিতে।
তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, বিচারকদের অবশ্যই শরিয়াহ আইন অনুযায়ী অপরাধীদের শাস্তি দিতে হবে।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ গত রবিবার রাতে এক টুইটার পোস্টে বলেছেন, মোল্লা আখুন্দজাদা একদল বিচারকের সঙ্গে দেখা করার পরে শরিয়া আইনে শাস্তির আদেশ দিয়েছেন। আখুন্দজাদাকে উদ্ধৃত করে তিনি লিখেছেন, “চোর, অপহরণকারী ও রাষ্ট্রদ্রোহীদের নথিপত্র সাবধানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করুন।”
তবে শরিয়া আইন অনুযায়ী শাস্তির ধরন কেমন হবে তা স্পষ্টভাবে জানাননি জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ। তবে আফগানিস্তানের একজন ধর্মীয় নেতা বিবিসিকে বলেছেন, শরিয়া আইনের অধীনে শাস্তির মধ্যে অঙ্গচ্ছেদ, প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত ও পাথর মারা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
গত সপ্তাহে তালেবান সরকার কাবুলের সমস্ত পার্কে নারীদের প্রবেশাধিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এছাড়া দেশটিতে পুরুষ সঙ্গী ছাড়া নারীদের দীর্ঘ দূরত্বের ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। দেশটির বেশির ভাগ কিশোরী মেয়েরা এখনো স্কুলে যেতে পারে না। গত মে মাসে নারীদের জনসমক্ষে বোরকা পরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।