ইরানে চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমনে দেশটির শাসকগোষ্ঠী যেসব কঠোর নীতি অনুসরণ করছে, তা বন্ধের আহ্বান জানাতে চলতি মাসেই জরুরি অধিবেশন তলব করবে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ইউএন হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল (ইউএনএইচআরসি)।
ইউএনএইচআরসির এক কর্মকর্তা আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়াকে জানিয়েছেন, ইরানে মানবাধিকার রক্ষার আহ্বান জানিয়ে তলব করা এই বিশেষ অধিবেশনটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৪ নভেম্বর।
গত শুক্রবার সুইজারল্যান্ডে নিযুক্ত জার্মানি ও আইসল্যান্ডের ২ রাষ্ট্রদূত একটি বিশেষ ইরান ইস্যুতে অধিবেশন আহ্বানের জন্য জাতিসংঘ বরাবর আবেদন জানিয়েছিলেন। তাতে সাড়া দিয়েই এই অধিবেশন ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএনএইচআরসি।
ইউএনএইচআরসির সদস্যরাষ্ট্র ৪৭টি। ইতোমধ্যে ১৬টি সদস্যরাষ্ট্র এই বিশেষ অধিবেশনকে সমর্থন জানিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আল আরাবিয়ার প্রতিবেদনে।
মাথায় হিজাব ঠিকমতো না পরা ও বোরকা না থাকায় গত ৯ অক্টোবর ইরানের নৈতিকতা পুলিশের নির্যাতনের শিকার হন ২২ বছরের তরুণী মাশা আমিনি। তারপর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ অক্টোবর মৃত্যু হয় তার।
মাশা আমিনির মৃত্যুর পর তার মৃত্যুর জন্য দায়ীদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে এক অভূতপূর্ব আন্দোলন শুরু হয় ইরানে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে একসময় তা রূপ নেয় সরকারবিরোধী বিক্ষোভে।
আন্দোলন সরকারবিরোধী বিক্ষোভে রূপ নেওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তা দমনে তৎপর হয়ে ওঠে ইরানে ক্ষমতাসীন ইসলামপন্থী শাসকগোষ্ঠী। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহারসহ ঢালাওভাবে তাদের গ্রেপ্তার করতে থাকে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটসের তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসের বিক্ষোভে ইতোমধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩২৬ জন এবং গ্রেপ্তার হয়েছেন হাজারেরও অধিক বিক্ষোভকারী।
১৯৭৯ সালে ইরানের শাহের পতনের পর এত বড় মাত্রার বিক্ষোভ আর ইরানে দেখা যায়নি।