শীতের আগমনী বার্তার সঙ্গে সঙ্গে অবনতি হতে শুরু করেছে রাজধানী ঢাকার বাতাসের মান। রবিবার (১৩ নভেম্বর) সকালেও “অস্বাস্থ্যকর” অবস্থায় রয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বের বায়ুমান যাচাই বিষয়ক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান “এয়ার ভিজ্যুয়ালের” বায়ুমান সূচক (একিউআই) ইনডেক্সে ২৫৩ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে ঢাকা।
৩০৪ স্কোর নিয়ে প্রথম অবস্থানে আছে পাকিস্তানের লাহোর। ভারতের দিল্লি ও কলকাতা চীনের বেইজিং যথাক্রমে একিউআই ২০২ ও ১৮৮ স্কোর নিয়ে তালিকায় তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ২০০ পর্যন্ত “অস্বাস্থ্যকর” হিসেবে বিবেচিত হয় বিশেষ করে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য। একইভাবে একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে স্বাস্থ্য সতর্কতাসহ তা জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ ও অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউ সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের জন্য কোন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা জানায়।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে- বস্তুকণা (পিএম ১০ ও পিএম২ দশমিক ৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজন (৩৩)।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণে ভুগছে। এর বাতাসের মান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়। এ বছরের শুরুর দিকে ঢাকা বেশ কয়েকবার বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে উঠে আসে।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হল, ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
বেশ কয়েকটি গবেষণা অনুসারে, বায়ুদূষণ ক্রমাগত বিশ্বব্যাপী মৃত্যু ও অক্ষমতার জন্য ঝুঁকির কারণগুলোর মধ্যে একটি। দীর্ঘদিন দূষিত বায়ুতে শ্বাস নেওয়ার ফলে একজন ব্যক্তি হৃদরোগ, শ্বাসযন্ত্রের রোগ, ফুসফুসের সংক্রমণ ও ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ুদূষণে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর মূলত স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী বাধা পালমোনারি রোগ, ফুসফুসের ক্যান্সার ও তীব্র শ্বাসকষ্ট সংক্রমণের ফলে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।