দিল্লির বায়ুদূষণের মাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে। গাড়ির ধোঁয়া এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোর খড় পোড়ানোর জেরে দিল্লির বাতাস আরও বিষাক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশুরা।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) সকালে দূষণের মাত্রা ছিল ৪০৮ একিউআই। বুধবার সন্ধ্যায় বাতাসে দূষণের পরিমাণ ছিল ৩৭৬ একিউআই।
চিকিৎসক এবং পরিবেশবিদরা বলছেন, “বাতাসের দূষণের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি থাকে সকালের দিকে। ওই সময় বাড়ি থেকে বের না হওয়াই ভালো।”
কিন্তু, সকালে শিশুদের স্কুলে যেতে হয়। তাই তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছেন দিল্লির একাধিক চিকিৎসক। আর এ কারণেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কাছে স্কুল বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়েছে দেশটির জাতীয় শিশু অধিকার কমিশন।
তাদের বক্তব্য, “বায়ু দূষণের মাত্রা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখা হোক।”
দিল্লির চিকিৎসক বিষ্ণু দে ঢাকা ট্রিবিউনের কন্টেন্ট পার্টনার ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, “দিল্লির বায়ুদূষণের মাত্রা এখন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়বে। ৬০% থেকে ৭০% মানুষ গলা এবং ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছেন। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্ক এবং শিশুরা।”
বিষ্ণু আরও বলেছেন, “সাধারণ ওষুধেও কাজ হচ্ছে না। কারণ, শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে বিষাক্ত বায়ু শরীরে ঢুকছে।”
পরিবেশবিদ দীপায়ন দে বলেছেন, “ভোরের দিকে বাতাসে দূষণের স্তর অনেক নীচের দিকে থাকে। যে কারণে শহরজুড়ে স্মগ বা ধোঁয়াশা তৈরি হয়। সে সময় বাইরে বার হওয়া সবচেয়ে খারাপ।”
শিশু অধিকার কমিশনের বক্তব্যও তাই। তারা বলেছে, “শিশুদের ওই সময়েই স্কুলে যেতে হয়। ফলে বহু শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ছে।”
তবে অভিভাবকেরা শিশু অধিকার কমিশনের সঙ্গে সহমত নন। তাদের বক্তব্য, “করোনাভাইরাসের জন্য দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ ছিল। ছাত্র-ছাত্রীদের তার ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এবার দূষণের কারণে স্কুল বন্ধ হলে তারা আরও পিছিয়ে পড়বে। সরকারের দীর্ঘস্থায়ী কোনো সমাধানসূত্র খুঁজে বের করতে হবে। স্কুল বন্ধ করে দেওয়া কোনো সমাধান নয়।”
এর আগেও দূষণের জন্য দিল্লিতে স্কুল বন্ধ রাখতে হয়েছে। সরকার এবারেও জানিয়েছে, অপ্রয়োজনে বাড়ি থেকে বার না হওয়াই ভালো। সম্ভব হলে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অফিসগুলো সে পরামর্শ মানছে না বলেই দাবি পরিবেশবিদদের।
পরিবেশবিদদের বক্তব্য, বায়ুর গতি এখন যা, তাতে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেও দিল্লির দূষণ কমার বিশেষ সম্ভাবনা নেই।
সূত্র: ডয়চে ভেলে