দক্ষিণ কোরিয়ার স্থলভূমির খুব কাছে মিসাইল ছুঁড়েছে উত্তর কোরিয়া। কয়েকটি মিসাইল গেছে জাপানের ওপর দিয়ে। দুই কোরিয়ার মধ্যবর্তী বাফার জোনে একের পর এক মিসাইলগুলো ছোঁড়া হয়। বুধবার (২ নভেম্বর) সবমিলিয়ে ২৩টি মিসাইল ছুঁড়েছে কিম জং উনের দেশ।
প্রতিটি মিসাইলই সমুদ্রে নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে কয়েকটি মিসাইল জাপানের ওপর দিয়ে গিয়ে সমুদ্রে পড়েছে। একটি মিসাইল দক্ষিণ কোরিয়ার সমুদ্রতট থেকে মাত্র ৫৭ কিলোমিটার দূরে গিয়ে পড়েছে। যার জেরে উলেউং দ্বীপে যুদ্ধের সাইরেন বেজে ওঠে।
বুধবার স্থানীয় সময় সকাল থেকেই একের পর এক মিসাইল ছুঁড়তে থাকে উত্তর কোরিয়া। পাল্টা জবাব দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়াও। তাদের মিসাইলও দুই কোরিয়ার মধ্যবর্তী বাফার জোনে গিয়েই পড়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের দাবি, এদিন বেশ কয়েকটি কম পাল্লার মিসাইলও নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া।
ঘটনার পর জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, “উত্তর কোরিয়াকে কোনোভাবেই ক্ষমা করা হবে না।”
তিনি জানান, এদিন উত্তর কোরিয়ার মিসাইল জাপানের আকাশ দিয়ে এমনভাবে গেছে যে মিয়াগি, ইয়ামাগাতা এবং নিগাতা অঞ্চলে সাইরেন বেজে উঠেছে। বেসামরিক মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়াও ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছে।
উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, কোরীয় উপকূলে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়ার জবাবেই তারা এ কাজ করছে। কারণ, শুরু থেকেই এই মহড়াকে উত্তর কোরিয়া হুমকি বলে মনে করছে।
তবে জাপানের সামরিক দিয়েছে ভিন্ন তথ্য। তারা বলছে, উত্তর কোরিয়ার মিসাইল চিহ্নিত করার পর অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল। কিন্তু পরে মিসাইলের গতিপথ ট্র্যাক করা হয়েছে। মিসাইলটি জাপানের খুব কাছ দিয়ে গেলেও তার আকাশসীমায় ঢোকেনি।
বিশ্বের প্রতিক্রিয়া
এ ঘটনায় উত্তর কোরিয়ার কড়া নিন্দা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন বলছে, “উত্তর কোরিয়া যা করছে তা ক্ষমাহীন। দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানকে রক্ষা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সর্বদা আছে।”
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল বলেছেন, উত্তর কোরিয়া উত্তেজনা ক্রমশ বাড়াচ্ছে। যুক্তরাজ্যও এর নিন্দা করেছে। রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে শান্ত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র এবং গোলা-বারুদ কিনছে রাশিয়া। ইউক্রেন যুদ্ধে তা ব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও উত্তর কোরিয়া একাধিকবার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।