ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রফতানি সংক্রান্ত চুক্তি নিয়ে মুখ খুলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সোমবার তিনি বলেছেন, তার দেশ এই চুক্তি থেকে সরে যায়নি, বরং সাময়িকভাবে এটি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
জাতিসংঘের সহায়তা কর্মসূচির প্রধান মার্টিন গ্রিফিথসের কণ্ঠেও পুতিনের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি শোনা গেছে। তিনি বলেছেন, মস্কো চুক্তিতে অংশগ্রহণ স্থগিত করেছে। তারা সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যায়নি।
এর আগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে খাদ্যশস্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ তোলে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এমন অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় হওয়া খাদ্যশস্য চুক্তি থেকে সরে গিয়ে মানবিক সংকট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া। প্রকৃতপক্ষে এর মধ্য দিয়ে খাদ্যশস্যকে তারা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। এতে দুনিয়াজুড়ে খাবারের পেছনে মানুষের ব্যয় বাড়াবে, ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বাড়বে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন, মস্কো চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিলেও এই উদ্যোগ টিকিয়ে রাখতে তার দেশ বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ গম উৎপাদন করে রাশিয়া ও ইউক্রেন। দুর্ভিক্ষের হুমকিতে থাকা দেশগুলোতে এই গম পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে তুরস্ক।
এরদোয়ান বলেন, ‘আমরা বিশ্বকে ৯৩ লাখ টন ইউক্রেনীয় গম সরবরাহ করেছি। যৌথ সমন্বয় কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে খাদ্য সংকটকে তুলনামূলক কমাতে সাহায্য করেছি।’ তিনি বলেন, যদিও রাশিয়া এই বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত, কেননা তাদের জন্য একই সুবিধা দেওয়া হয় না। তবে আমরা মানবতার কল্যাণে দৃঢ় সংকল্প নিয়ে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো।’
শনিবার ক্রিমিয়ায় কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার পর ইউক্রেনের সঙ্গে খাদ্যশস্য রফতানির চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয় রাশিয়া। বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ সহজ করার উদ্দেশে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় প্রাথমিকভাবে তিন মাসের জন্য ওই চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। এর আওতায় নিজ দেশের কৃষ্ণ সাগর উপকূলের বন্দর দিয়ে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে খাদ্যদ্রব্য রফতানির সুযোগ পায় ইউক্রেনে। এখন এই চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার ঘটনাকে বিশ্বে খাদ্যশস্য সরবরাহ নিশ্চিতের পথে বড় ধরনের একটি আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে।