ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার খাদ্যশস্য চুক্তি বাঁচিয়ে রাখতে তুরস্ক বদ্ধপরিকর। সোমবার ইস্তাম্বুলে এক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে এমন মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
এরদোয়ান বলেন, মস্কো চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া সত্ত্বেও এই উদ্যোগ টিকিয়ে রাখতে আঙ্কারা বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ গম উৎপাদন করে রাশিয়া ও ইউক্রেন। দুর্ভিক্ষের হুমকিতে থাকা দেশগুলোতে এই গম পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে তুরস্ক।
এরদোয়ান বলেন, ‘আমরা বিশ্বকে ৯৩ লাখ টন ইউক্রেনীয় গম সরবরাহ করেছি। যৌথ সমন্বয় কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে খাদ্য সংকটকে তুলনামূলকভাবে কমাতে সাহায্য করেছি।’
তিনি বলেন, ‘যদিও রাশিয়া এই বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত, কেননা তাদের জন্য একই সুবিধা দেওয়া হয় না। তবে আমরা মানবতার কল্যাণে দৃঢ় সংকল্প নিয়ে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো।’
এমন সময়ে এরদোয়ানের এই মন্তব্য সামনে এলো যার দুই দিন আগেই ইউক্রেনের সঙ্গে খাদ্যশস্য রফতানির চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয় রাশিয়া। শনিবার ক্রিমিয়ায় কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার পর ওই ঘোষণা দেয় রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ সহজ করার উদ্দেশে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় প্রাথমিকভাবে তিন মাসের জন্য ওই চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। এর আওতায় নিজ দেশের কৃষ্ণসাগর উপকূলের বন্দর দিয়ে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে খাদ্যদ্রব্য রফতানির সুযোগ পায় ইউক্রেনে। এখন এই চুক্তি থেকে রাশিয়ার বেরিয়ে যাওয়াকে বিশ্বে খাদ্যশস্য সরবরাহ নিশ্চিতের পথে বড় ধরনের একটি আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় হওয়া খাদ্যশস্য চুক্তি থেকে সরে গিয়ে মানবিক সংকট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া। প্রকৃতপক্ষে এর মধ্য দিয়ে খাদ্যশস্যকে তারা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। এতে করে দুনিয়াজুড়ে খাবারের পেছনে মানুষের ব্যয় বাড়াবে, ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বাড়বে।