বাংলাদেশের বান্দরবানের সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ অভিযানের কারণে রুমা, রোয়াংছড়ি, থানচি ও আলীকদম উপজেলায় পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এই নিষেধাজ্ঞা ৪ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
রবিবার (৩০ অক্টোবর) বান্দরবান জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াছমিন পারভিন তিবরিজীর সই করা এক পত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে রুমা, রোয়াংছড়ি, থানচি ও আলীকদম উপজেলায় স্থানীয় এবং বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা ৪ নভেম্বর বাড়ানো হলো।
এর আগে ১৭ অক্টোবর বান্দরবানের রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানের কারণে অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় পর্যটকদের যাতায়াত বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। এরপর ২৩ অক্টোবর থানচি ও আলীকদম উপজেলায় পর্যটক যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (রুটিন দায়িত্ব) মো. লৎফুর রহমানের সই করা চিঠিতে বলা হয়, “পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে আলীকদম ও থানচি উপজেলার স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটক প্রবেশ ২৩-৩০ অক্টোবর পর্যন্ত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।”
২০ অক্টোবর বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির প্রত্যন্ত অঞ্চলে ১০ দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সরঞ্জামসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা সন্দেহভাজন জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে জানানো হয়। এ ঘটনার পর স্থানীয়দের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
৯ অক্টোবর র্যাবের এই অভিযান শুরু হয় এবং ২০ অক্টোবর গভীর রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় নয়টি বন্দুক, ৫০ রাউন্ড গুলি, কার্তুজ, ৬২টি রামদা, ছয়টি হাতবোমা, একটি কার্তুজের কেস, দুটি কার্তুজের বেল্ট ও একটি দেশীয় পিস্তলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ও জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে নবগঠিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার সাত সদস্য এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) তিন সদস্য রয়েছেন।
এদিকে জেলার চারটি উপজেলায় পর্যটক যাতায়াত নিষিদ্ধ করা এবং যৌথ বাহিনীর অস্ত্র উদ্ধারসহ সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের কারণে জেলাজুড়ে আতংক বিরাজ করছে। প্রতি বছর শীত মৌসুমে জেলায় হাজার হাজার পর্যটকের আগমন ঘটলেও এবার নিষেধাজ্ঞা জারি থাকায় কোনো পর্যটক নেই। ফলে জেলার দুই শতাধিক হোটেল-মোটেল ও বিনোদন স্পটগুলো এখন পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে। আর্থিকভাবে লোকসান গুনছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।