অগ্রসরমান ইউক্রেনীয় সেনাদের সঙ্গে সম্ভাব্য বড় ধরনের লড়াইয়ের আগে দখলকৃত খেরসন থেকে বেসামরিকদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন রুশ কর্মকর্তারা। ধারণা করা হচ্ছে অন্তত ৭০ হাজার নাগরিককে ডনিপ্রো নদীর পূর্ব তীরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ইউক্রেন এই পদক্ষেপকে জোরপূর্বক মানুষদের সরিয়ে নেওয়া বলে অভিযোগ করেছে। শুক্রবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।
স্থানীয় একজন রুশ মিলিশিয়া কমান্ডার বলেছেন, আমরা খেরসন রক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এদিকে, রাশিয়া দাবি করেছে সেনা সমাবেশের লক্ষ্য তিন লাখ রিজার্ভ সেনাকে বাহিনীতে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে নতুন সমাবেশকৃত সেনাদের মধ্য থেকে ৪১ হাজারকে ইউক্রেনে যুদ্ধক্ষেত্রে মোতায়েন করা হয়েছে।
বিবিসির পক্ষ থেকে স্বতন্ত্রভাবে এই দাবি যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
গত মাসে ইউক্রেনের যে চারটি ভূখণ্ডকে রাশিয়ার অংশ বলে ঘোষণা করেছেন পুতিন খেরসন সেগুলোর একটি।
ক্রিমিয়াতে মস্কো মনোনীত কর্মকর্তা সের্গেই আকসিয়োনভ বৃহস্পতিবার রাতে ঘোষণা দিয়েছেন, বেসামরিক সরিয়ে নেওয়ার কাজ সমাপ্ত হয়েছে। তাদেরকে রাশিয়ার নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রুশ মিলিশিয়া কমান্ডার আলেক্সান্ডার খোদাকোভস্কি বলেছেন, আমরা বেসামরিকদের সরিয়ে নিয়েছি। লড়াইয়ে এটি আমাদের সহযোগিতা করবে।
দখলকৃত ভূখণ্ডে দখলদার বাহিনী কর্তৃক জনগণকে জোর পূর্বক নিয়ে আসা বা সরিয়ে নেওয়াকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আরেক রুশ কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন এখনও অনেক বেসামরিক খেরসনে রয়ে গেছেন। খেরসনে রুশ মনোনীত গভর্নর ভ্লাদিমির সালদো বলেছেন, দেড় লাখ থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার বেসামরিক ডনিপ্রো নদীর পূর্ব তীরে রয়ে গেছেন।
যুদ্ধের আগে শহরটিতে প্রায় ৩ লাখ মানুষ বসবাস করতেন।
রুশ দখলদার কর্তৃপক্ষের দেওয়া সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা।
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত খেরসন, যেটি যুদ্ধের শুরুর দিকেই দখল করে নেয় রুশ বাহিনী। আর সেপ্টেম্বরে অঞ্চলটিকে রাশিয়ার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সংযুক্তির ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। খেরসনে কী ঘটছে বুধবার ভার্চুয়ালি ভাষণে জেলেনস্কি তা উল্লেখ না করলেও কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সামরিক বিশ্লেষকরা পূর্ভাবাস দিয়েছেন যে, গত আট মাস আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর যুদ্ধের সবচেয়ে জোরালো লড়াই হতে যাচ্ছে খেরসনে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির এক উপদেষ্টা ওলেক্সি আরেস্টোভিচ বলেছেন, খেরসন থেকে রুশ সেনাদের পিছু হটার কোনও ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না। রাশিয়া নিজেদের শক্তিশালী করছে, পুনরায় সংগঠিত হচ্ছে। এর অর্থ হলো খেরসনে তীব্রতম লড়াই হতে চলেছে।