অতিদরিদ্র ও শ্রমজীবী মানুষের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে উচ্চ মজুরিতে কাজ দেওয়ার আশ্বাসে জিম্মি করে বিক্রির জন্য নেওয়ার সময় বাংলাদেশের খুলনা থেকে ৫৯ জন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৬। এ সময় দুই পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত দুজন হলেন- মানবপাচার চক্রের মূলহোতা খুলনার পাইকগাছার গড়ইখালীর মো. লিটন গাজী (৫৪) ও তার সহযোগী একই এলাকার মো. সোহাগ গাজী (১৯)।
র্যাব-৬ এর পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মোসতাক আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “খুলনা জেলার পাইকগাছা থানায় বসবাসরত দরিদ্র ও অসহায় খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের অসহায়ত্ব ও দারিদ্রতাকে পুঁজি করে একদল অতিলোভী ও দুষ্কৃতিকারী দেশের বিভিন্ন স্থানে মহাজনের কাছে শ্রমিকদের বিক্রি করে দেয়। বুধবার (২৬ অক্টোবর) একটি মানব পাচার চক্র পাইকগাছা থেকে নারী ও শিশুসহ ৫৯ জন দরিদ্র ও অসহায় মানুষকে নড়াইল জেলায় একটি ইটের ভাটায় কাজ দেওয়ার কথা বলে কৌশলে একটি বাসে ওঠায়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শ্রমিকদের জিম্মি করে বাসটি নড়াইলে না গিয়ে খুলনার খানজাহান আলী সেতু অতিক্রম করলে শ্রমিকরা বুঝতে পারে তাদের ফাঁকি দিয়ে অন্যত্র কোথাও নিয়ে যাচ্ছে। একপর্যায়ে তারা জানতে পারে যে তাদেরকে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং অন্য মহাজনের নিকট বিক্রি করে দেওয়া হবে।”
তিনি জানান, এ অবস্থায় অচেনা ইটের ভাটা এবং ওই এলাকার নিষ্ঠুর ও নির্মম অত্যাচারের কথা ভেবে তারা ভয় পেয়ে যায়। প্রতিকূল স্থানে যেতে চায়নি বিধায় বাসে অবস্থানরত নারী ও শিশুরা আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার শুরু করে। পরে স্থানীয় লোকজন বাসের ভেতরে চিৎকার ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির বিষয়ে র্যাবকে খবর দেয়। র্যাব-৬ খুলনা এর একটি দল দ্রুত গাড়িটির পিছু নিয়ে গতিরোধ করে। এ সময় মানবপাচার চক্রের দুজনকে আটক হয়। একইসঙ্গে ৫৯ ভুক্তভোগীকে উদ্ধার হয়।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, ভুক্তভোগীদের বক্তব্য এবং আটক দুজনকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার সত্যতা এবং ঘটনার সঙ্গে আটকদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আটক দুজনকে পাইকগাছা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।