হিজাব না পরায় নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ও পরে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ সহিংসভাবে দমন করায় ১২ জনের বেশি ইরানি কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই কর্মকর্তাদের কালোতালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কপর্সের গোয়েন্দাপ্রধান মোহাম্মদ কাজেমি, সিস্তান ও বেলুচিস্তান প্রদেশের গভর্নর হোসেন মোদারেস খিয়াবানি, ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) কর্মকর্তা ইসফাহান শহরের পুলিশ প্রধান। এছাড়া জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ের সাতজন কারা কর্মকর্তা রয়েছেন ওই তালিকায়।
পাশাপাশি ইরানের দুই গোয়েন্দা কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
যুক্তরাষ্ট্র বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী জাহেদান এলাকায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ৮০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় সিস্তান ও বেলুচিস্তানের গভর্নর খিয়াবানিকে দায়ী করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে ২২ বছরের মাহসা আমিনির মৃত্যুর ৪০ দিন পার হয়েছে। আমরা আমিনির পরিবার ও ইরানের জনগণের জন্য শোক জানাচ্ছি।
নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার দল হেনগো বলছে, আমিনির মৃত্যুর ৪০তম দিন পালনের সময় হাজার হাজার বিক্ষোভকারীর ওপর গুলি চালান নিরাপত্তাকর্মী। এরপরই এ নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
এদিকে পুলিশের হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুকে ঘিরে ইরানজুড়ে যে বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে, এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। বিক্ষোভ নিয়ে সোমবারই প্রথম মুখ খুললেন খামেনি।
তিনি বলেন, এ ‘দাঙ্গা’ ইরানের চিরশত্রু এবং তাদের মিত্রদের ‘রচিত’। বিক্ষোভে পবিত্র কোরআন পোড়ানো হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে ভবিষ্যৎ বিক্ষোভ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন। খামেনির এক দশকের শাসনামলে ইরানে এটিই সবচেয়ে বড় বিক্ষোভে পরিণত হয়েছে।