আনরিখ নর্কিয়ার সামনে দাঁড়াতেই পারলো না বাংলাদেশের টপ অর্ডার। এই পেসারের তোপে এলোমেলো বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই খেই হারায় সাকিব আল হাসানরা। ওই জায়গা থেকে আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি। ফলে আরেকবার ব্যাটিং ব্যর্থতায় অসহায় আত্মসমর্পণ বাংলাদেশের।
আজ (বৃহস্পতিবার) সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশকে ১০৪ রানে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। টস জিতে আগে ব্যাট করা দক্ষিণ আফ্রিকা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে করেছে ২০৫ রান। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা ১৬.৩ ওভারে অলআউট ১০১ রানে।
কঠিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই এলোমেলো বাংলাদেশ। সৌম্য সরকারের ব্যাটে ভালো কিছুর আভাস মিললেও সেটা মিলিয়ে যেতে সময় লাগেনি। দ্রুতই সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। ওপেনার সঙ্গীকে হারিয়ে নাজমুল হাসান শান্তও টিকে থাকতে পারেননি। খানিক পর সাকিবও তাদের সঙ্গী হয়েছেন!
এই তিনটি উইকেটই নর্কিয়ার। সৌম্যর ব্যাটে ছিল দারুণ শুরু। প্রথম ওভারে কাগিসো রাবাদাকে পরপর দুই বলে ছক্কা মেরেছেন। কিন্তু নর্কিয়া বল হাতে নিতেই সব পাল্টে গেলো। তার প্রথম বলেই ঘায়েল সৌম্য। প্রোটিয়া পেসারের বল বাঁহাতি ব্যাটারের ব্যাট ছুঁয়ে গেলে ধরা পড়েন উইকেটকিপার কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসে। তার আগে ৬ বলে ২ ছক্কায় ১৫ রানের ইনিংস খেলেন সৌম্য।
২ বল পরই আবার হতাশা বাংলাদেশের ডাগআউটে। এবার বিদায় নেন শান্ত। ওই নর্কিয়ার বলেই ক্লিন বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি। ৯ বলে ১ বাউন্ডারিতে ৯ রান করেন শান্ত।
দ্রুত ২ উইকেট পড়ে যাওয়ায় অধিনায়ক সাকিবের কাঁধে বাড়তি দায়িত্ব চেপে বসে। সেই চাপেই কিনা মাত্র ১ রান করে আউট তিনি! নর্কিয়ার তৃতীয় শিকার হয়ে মাত্র ১ রান করে দলের চাপ আরও বাড়িয়ে যান বাংলাদেশ অধিনায়ক।
৩৯ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশ আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। নর্কিয়া গড়ে দেওয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে প্রোটিয়াদের অন্য বোলাররা জ্বলে ওঠেন। বিশেষ করে, বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার তাবরেজ শামসি। কাগিসো রাবাদার বলে আফিফ হোসেন (১) বিদায় নেওয়ার পর এই স্পিনারের ঘূর্ণিজাদু শুরু। শুরুটা করেন মেহেদী হাসান মিরাজকে দিয়ে। ইয়াসির আলীর জায়গায় একাদশে সুযোগ পাওয়া মেহেদী তেমন কিছু করতে পারেননি। শামসির বলে বিগ শট খেলতে গিয়ে এইডেন মারক্রামের হাতে ধরা পড়েন। ১৩ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ১১ রান।
এরপর শামসির শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান নুরুল হাসান সোহান (২)। আশার আলো হয়ে জ্বলে থাকা লিটন দাসও এই স্পিনারের শিকার। সতীর্থদের ব্যর্থতার মাঝে একপ্রান্ত আগলে রাখা লিটন ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন ট্রিস্টন স্টাবসের হাতে। যাওয়ার আগে ৩১ বলে ১ চার ও ১ ছক্কায় খেলেন ৩৪ রানের ইনিংস। এর মাঝে কেশব মহারাজের শিকারে পরিণত হন মোসাদ্দেক হোসেন (০)।