বিশ্বব্যাংক বলেছে, ২০২৩ সালে জ্বালানি এবং গমসহ অনেক পণ্যের দাম কমবে। বিশ্বে জ্বালানির দাম ১১ শতাংশ হ্রাস পাবে। অন্যদিকে ২০২২ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে গমের দাম ২০ শতাংশ কমেছে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের পর বেশিরভাগ উন্নয়নশীল দেশের মুদ্রার অবমূল্যায়নের ফলে খাদ্য ও জ্বালানির দাম বেড়েছে। এটা বিদ্যমান খাদ্য ও জ্বালানি সংকটকে আরও দীর্ঘায়িত করতে পারে।
গতকাল বুধবার আন্তর্জাতিক ঋণদানকারী সংস্থাটির সর্বশেষ কমোডিটি মার্কেট আউটলুকে বলা হয়, আসন্ন বিশ্বমন্দার উদ্বেগের মধ্যে মার্কিন ডলারের বিপরীতে বেশিরভাগ পণ্যের দাম সম্প্রতি চূড়ায় ওঠার পর বর্তমানে হ্রাস পেয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে গত মাসের শেষ পর্যন্ত মার্কিন ডলারে অশোধিত তেলের দাম প্রায় ৬ শতাংশ কমেছে। তবুও মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে প্রায় ৬০ শতাংশ তেল-আমদানিকারী উন্নয়নশীল দেশে অভ্যন্তরীণ বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় ৯০ শতাংশ দেশে মার্কিন ডলারের দাম বৃদ্ধির তুলনায় স্থানীয় মুদ্রায় গমের দাম অনেক বেড়েছে।
কৃষি উৎপাদনের অন্যতম উপকরণ জ্বালানির উচ্চমূল্যের কারণে খাদ্যের দাম বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে দক্ষিণ এশিয়ায় খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্টম্ফীতি গড়ে ২০ শতাংশের বেশি ছিল। লাতিন আমেরিকা, ক্যারিবিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা, সাব-সাহারান আফ্রিকা এবং পূর্ব ইউরোপ ও মধ্য এশিয়াসহ অন্যান্য অঞ্চলে খাদ্য মূল্যস্টম্ফীতি ১২ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে।
বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট পাবলো সাভেদ্রা বলেছেন, অনেক পণ্যের দাম চূড়ায় ওঠার পর কমলেও তা গত পাঁচ বছরের গড় মূল্যের তুলনা অনেক বেশি। বিশ্বে খাদ্য মূল্যের আরও বৃদ্ধি উন্নয়নশীল দেশগুলোর খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার চ্যালেঞ্জকে দীর্ঘায়িত করতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে জ্বালানির দাম বেশ অস্থির ছিল। কিন্তু এখন কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। জ্বালানির দাম ২০২২ সালে প্রায় ৬০ শতাংশ বৃদ্ধির পর ২০২৩ সালে দাম ১১ শতাংশ হ্রাস পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। তবে দাম কমলেও আগামী বছর জ্বালানির দাম গত পাঁচ বছরের গড় থেকে ৭৫ শতাংশ বেশি হবে।
২০২৩ সালে অপরিশোধিত তেলের দাম গড়ে প্রতি ব্যারেল ৯২ ডলার হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে গত পাঁচ বছরের গড় দাম ছিল ৬০ ডলার। প্রাকৃতিক গ্যাস এবং কয়লার দাম ২০২২ সালের রেকর্ড উচ্চ থেকে ২০২৩ সালে কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আগামী বছর কৃষিপণ্যের দাম ৫ শতাংশ কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২২ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে গমের দাম প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে। তবে এক বছর আগের তুলনায় তা ২৪ শতাংশ বেশি রয়েছে। ২০২৩ সালে বিশ্বে গমের ভালো ফসন, চালের বাজারে স্থিতিশীল সরবরাহ এবং ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানি পুনরুদ্ধারের কারণে এটা ঘটবে। বৈশ্বিক মন্দার আশঙ্কার কারণে ২০২৩ সালে ধাতুর দাম ১৫ শতাংশ হ্রাস পাবে বলে অনুমান করা হয়েছে প্রতিবেদনে।