বিশ্বকাপ আসে, বিশ্বকাপ যায়; বাংলাদেশের দ্বিতীয় রাউন্ডের জয়টা অধরাই রয়ে যায়’– অষ্টম বিশ্বকাপে এসে এই নিয়তিটা অবশেষে বদলেছে সাকিব আল হাসানের দল। বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়েছে ৯ রানে। তাতেই গড়া হয়ে গেছে ইতিহাসটা, প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় রাউন্ডে জয় পেয়ে গেছে বাংলাদেশ।
টসে হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল দারুণ। শুরুর ওভারে সৌম্য সরকার দুই চার মেরে জানান দিয়েছিলেন ইতিবাচক ‘ইন্টেন্টের’। দুই ওভার পর নাজমুল হোসেনও হাত খুললেন, দুই ওভারে হাঁকালেন চারটি চার। পাঁচ ওভারেই উঠে গেল ৪১ রান। ২০২২ সালে দলের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি ছিল ৩৭ রান, সেটাও টপকে ফেলা গেল আজ।
তবে হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে এরপরই যেন পথ হারাল বাংলাদেশ। সৌম্য সরকার ফিরলেন পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে। এর পরের তিন ওভারে শান্ত, লিটন দাস আর সাকিব আল হাসানকেও খোয়াল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ক্ষয়রোগের ভয়টা দারুণভাবেই পেয়ে বসেছিল তখন দলকে।
তখনই আফিফ হোসেন দাঁড়িয়ে যান, ২৭ বলে ২টি করে চার আর ছয়ে ৩৮ রান করে বাংলাদেশকে পথ দেখান। তবে তার ওপাশে সঙ্গী ছিলেন না কেউ, তাই দলের রানটাও বড় হয়নি আর। শেষ দিকে মোসাদ্দেক হোসেন ছিলেন বলে বাঁচোয়া, তার ১২ বলে ২০ রান না হলে যে ১৪৪ রানের পুঁজিটাও পেত না বাংলাদেশ!
অল্প পুঁজি, তাই জয় পেতে হলে বাংলাদেশের শুরুটা হতে হতো আঁটসাঁট। তাসকিনের হাত ধরে সেটাই পেল দল। শুরুর দুই বলে ফেরালেন বিক্রমজিৎ সিং আর বাস ডি লিডকে। চতুর্থ ওভারে জোড়া রানআউটে ম্যাচটা হেলে পড়ে বাংলাদেশের দিকেই।
তবে এরপরই ডাচরা ম্যাচে ফেরে কলিন অ্যাকারম্যান আর স্কট অ্যাডওয়ার্ডসের জুটিতে। দুজন মিলে ৪৪ রানের জুটি গড়ে ডাচদের ফেরান লড়াইয়ে। যদিও অ্যাডওয়ার্ডসকে ফিরিয়ে সাকিব আবারও ম্যাচ থেকে ছিটকে দিচ্ছিলেন দলটিকে। এরপর হাসান মাহমুদ পেলেন জোড়া উইকেট। ৮১ রানে ৭ উইকেট খুইয়ে ডাচরা তখন অকূল পাথারই দেখছে।
১৭তম ওভারে আক্রমণে এসে তাসকিন আহমেদ যখন ফেরালেন শারিজ আহমেদ আর ইনিংস সর্বোচ্চ ৬২ রান করা অ্যাকারম্যানকে। জয়টা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে তখনই। শেষ ওভারে সৌম্য সরকার পল ফন মিকারেনকে ফিরিয়ে বাকি আনুষ্ঠানিকতাটা সারেন। তাতেই ৯ রানের দারুণ এক জয়ে বিশ্বকাপে শুভসূচনা করে বাংলাদেশ। খুলে ফেলে ইতিহাসের গেরোও।