গত ১৬ সেপ্টেম্বরে ইরানে পুলিশ হেফাজতে কুর্দি নারী মাহাশা আমিনির (২২) মৃত্যুর প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভে সংহতি জানিয়ে বিশ্বের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ হয়েছে। তেহরানের রাজপথ ছাড়িয়ে জার্মানির বার্লিনেও বড় ধরনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ইরানের শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে স্লোগান দেন অনেকে।
দোকানদার ও কারখানার শ্রমিকরা শনিবার ইরানে ধর্মঘট করেছে বলে জানা গেছে। এদিন ইরানে আয়োজিত বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছেন নারীরা। মাথার স্কার্ফ খুলে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন তারা। যদিও নিরাপত্তা বাহিনী তাদের থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। মাহাশার মৃত্যুর প্রতিবাদে আন্দোলেনে এ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত ১২২ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো।
ইরানে বড় ধরনের বিক্ষোভের আয়োজনের আভাস পেয়ে সরকার ইন্টারনেট পরিষেবার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করে। যেন সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ছড়িয়ে না দেওয়া যায়। কত সংখ্যাক মানুষ জড়ো হয়েছিল তা নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।
এ প্রসঙ্গে এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতার জন্য একসঙ্গে লড়বো।’
ইরানের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাজিদ মিরাহমাদি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘তাদের বিক্ষোভের দিন শেষ। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা জমায়েত হয়। আন্দোলনে অংশ নেওয়া মানুষের সংখ্যা প্রতিদিনই কমছে। বিক্ষোভের শেষ দিন চলে এসেছে’।
কয়েকটি ভিডিও’তে দেখা গেছে, তেহরানের শহীদ বেহেশতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে জড়ো হন অনেক শিক্ষার্থী। সেখানে সরকারবিরোধী স্লোগানে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
সংহতি জানিয়ে জার্মানির রাজধানী বার্লিনে বড় ধরনের সমাবেশ হয়েছে। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রাখতে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। বিবৃতিতে ইরানিয়ানস ফর জাস্টিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস গ্রুপ ইরানের রাষ্ট্রদূতদের বহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছে।
এদিন বার্লিনের র্যালিতে ৮০ হাজারের বেশি নারী-পুরুষ অংশ নেন। আন্দোলনে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে এসেও যোগ দেন। এছাড়া জাপান এবং অস্ট্রেলিয়াতে ইরানের নারীদের প্রতি সমর্থন এবং কুর্দি নারী মাহাশা আমিনির মৃত্যুর বিচার চেয়ে বিক্ষোভ হয়।
সূত্র: এএফপি