করোনা মহামারিসহ নানা সংকটের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব এখন পেছনের দিকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনি গুতেরেস।
সোমবার আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো মহাসচিবের বাণীতে এ তথ্য জানানো হয়।
অ্যান্টনি গুতেরেস বলেন, ‘আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবস পালনের এই সময়ে আমরা কঠিন এক সত্যের মুখোমুখি। বিশ্ব পেছনের দিকে যাচ্ছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘কোভিড-১৯-এর ধাক্কায় কোটি মানুষ দরিদ্র হয়েছে, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে চার বছরের বেশি সময় ধরে যে অগ্রগতি অর্জিত হয়েছিল, তা ধূলিসাৎ হয়েছে। কর্মসংস্থান হারানো, খাদ্য ও জ্বালানির দামবৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক মন্দার কালোছায়ায় জাতীয় ও পরিবার পর্যায়ের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘একই সময়ে জলবায়ু সংকট ও ক্রমবর্ধমান সংঘাত ব্যাপক ভোগান্তির সৃষ্টি করছে, সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী দরিদ্রতম মানুষরাই। উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতি সংকুচিত হচ্ছে, পুনরুদ্ধার ও প্রবৃদ্ধিতে বিনিয়োগের জন্য সম্পদে প্রবেশাধিকার ও ঋণমুক্তি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন কঠিন করে তুলেছে এই পরিস্থিতি।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, “বিশ্বের জন্য আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবস সতর্কবার্তা নিয়ে এসেছে। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘কাজেকর্মে সবার জন্য মর্যাদা’। এই প্রতিপাদ্য জরুরি ভিত্তিতে বৈশ্বিক পদক্ষেপের এক উদাত্ত আহ্বান।
“স্বাস্থ্য ও মর্যাদাপূর্ণ কাজ থেকে শুরু করে লিঙ্গসমতা, সামাজিক সুরক্ষা পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে এবং খাদ্য ও শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তনে জনঘনিষ্ঠ সমাধানে বিনিয়োগের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।”
তিনি বলেন, ‘মানসিকভাবে দেউলিয়া হওয়া বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং সব দেশের আর্থিক অনুদান ও ঋণছাড় পাওয়া নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
‘উন্নয়নশীল দেশগুলো, যারা এই ধরিত্রীকে ধ্বংসকারী জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী সবুজ অর্থনীতির দিকে ঝুঁকছে, তাদের সহযোগিতা দিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’
সংঘাত বন্ধে, ভূরাজনৈতিক বিভক্তি দূরীকরণে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণে জোর দেন গুতেরেস। বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ এই দিবসে আসুন আমরা সবার জন্য আরও সুন্দর এক বিশ্ব গড়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করি। আসুন আমরা দারিদ্র্য বিমোচন করে একে ইতিহাসের পাতায় পাঠিয়ে দিই।’